আজকের দিন তারিখ ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় রাজধানীতে পানি সংকটের স্থায়ী সমধান দরকার

রাজধানীতে পানি সংকটের স্থায়ী সমধান দরকার


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৯, ২০২১ , ১:৩৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় চলছে পানি সংকট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিধিনিষেধে ঘরবন্দি বিভিন্ন এলাকার মানুষ। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে রমজান মাস। চাহিদার তুলনায় পানির সরবরাহ যেমন কম তেমন তার মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
নদীমাতৃক ও প্রবল বৃষ্টির দেশ হওয়ার পরও বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার দুর্ভাগ্যজনকই বটে। পানি জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য হওয়ায় প্রকৃতি তা ফ্রি করে দিয়েছে, কিন্তু দূষণের পেছনের হাত তো মানুষেরই। ইউনিসেফের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৯৮ ভাগ মানুষের আওতায় কোনো না কোনোভাবে পানির উৎস রয়েছে। তবে সুপেয় পানি পাচ্ছে মাত্র ৫৬ শতাংশ। এখনো ১৩ ভাগ পানিতে গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়া পাইপলাইন, টিউবওয়েল এবং পুকুরের পানিতে কোলাই ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষতিকর অণুজীবের অস্তিত্ব থাকার কথাও বলা হয় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে। নানারকম বর্জ্যরে কারণেই মূলত পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। জানা যায়, ওয়াসার দৈনিক পানির উৎপাদন সক্ষমতা ২৬০ কোটি লিটার। ঢাকা শহরে শীত-বর্ষা অনুযায়ী ২১০ থেকে ২৪৫ কোটি লিটার পর্যন্ত চাহিদা থাকে। এর মধ্যে ৭৮ শতাংশ তোলা হয় গভীর নলকূপ দিয়ে, বাকিটা বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পাঁচটি শোধনাগারে শোধনের মাধ্যমে। যা শোধনের পরও দূষিত ও মানহীনই থাকছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬২ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানে বিষাক্ত হয়ে পড়া বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি শোধন করতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা ওয়াসা। এ দুটি নদীর পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান এতই বেশি যে, ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য শোধনের সময় মেশানো হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ক্লোরিন, এলাম (চুন) ও লাইন (ফিটকিরি)। তারপরও দুর্গন্ধ থাকছে পানিতে। অনেক সময় শোধিত পানি থেকে বের হয় ক্লোরিনের গন্ধ। যদিও ওয়াসার দাবি, শোধিত পানিতে সমস্যা নেই। এদিকে বিভিন্ন স্থানের পাইপলাইনে রয়েছে অসংখ্য ফুটো বা লিকেজ। এসব ফুটো দিয়ে বর্জ্য ঢুকছে পাইপলাইনের মধ্যে। একইভাবে বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে স্যুয়ারেজ লাইনেও। এ পানি অতিমাত্রায় ফুটানোর পরও পানযোগ্য করতে পারছেন না নগরবাসী। ওই পানি ব্যবহারে চোখ জ্বলা, গা চুলকানোসহ নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। কলেরা হাসপাতালেও বেড়ে যায় রোগীদের ভিড়। আমরা মনে করি, পানির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে কোনো ধরনের অবহেলার অবকাশ নেই। রাজধানীতে পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পানির বিকল্প উৎস যেমন সন্ধান ও ব্যবহার করতে হবে তেমনি ঢাকা ওয়াসার কার্যক্রম আরো বাড়াতে ও গতিশীল করতে হবে। কোভিড সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও রমজান মাসে ঢাকা মহানগরে পানি সরবরাহ ঠিক রাখতে ওয়াসার মডস জোনগুলোর কার্যক্রম তদারকির জন্য ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ১০টি অ্যাডভাইজরি ও মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছিল। সংকট মোচনে তাদের ভূমিকা কি সেই প্রশ্নও সামনে আসছে।