আজকের দিন তারিখ ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় পোশাক কারখানায় আক্রান্ত বাড়ছে : শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি

পোশাক কারখানায় আক্রান্ত বাড়ছে : শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ১৩, ২০২০ , ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে নতুন করে কারখানা চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত অন্তত শতাধিক শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন মারাও গেছেন। তবে আক্রান্ত নিয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে রপ্তানি খাতের কারখানাগুলো খোলার কথা বলা হলেও এখন শিল্পাঞ্চলের প্রায় সব কারখানাই খোলা। আংশিকভাবে কিছু কিছু বড় কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অধিকাংশ কারখানাই কোনো নিয়মনীতি মানছে না। এতে কারখানাগুলোতে দিন দিন বাড়ছে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে আমাদের ভয়াবহ বিপর্যয় দেখতে হবে হয়তো। শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন, লোক দেখানোর নামে কারখানা গেটে স্বাস্থ্যবিধি লিখে রাখলেও কারখানার ভেতর শ্রমিকদের বসার ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব রাখছে না। মাস্ক নেই, নেই পিপিই। এমন অবস্থা যদি হয় কারখানাগুলোর চিত্র তাতে শঙ্কা বেড়ে যাবে স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সতর্ক করে বলেছে, শ্রমিকদের কাজে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা না দিলে ভাইরাসের দ্বিতীয় দফা ঢেউ আসতে পারে। আইএলও সরকারের প্রতি কর্মক্ষেত্রে কোভিড-১৯ রোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে ও সংলাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করে আইএলও। আইএলওর প্রস্তাব আমাদের দেশের পোশাক খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ এবং দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ জোগান দেয় এ খাত। এই বিপুল মুনাফার জোগান আসে মূলত শ্রমিকদের সস্তা শ্রম থেকে। বছরের পর বছর সরকার বাজেটের মাধ্যমে গতানুগতিক পথে এছাড়া বিভিন্ন অর্থনৈতিক অজুহাতে এ শিল্পের মালিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, পোশাক শ্রমিকদের বেতনভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা লেগেই থাকে। করোনা ইস্যুতে নতুন করে সংকটে পড়ছে তৈরি পোশাক খাত। করোনার প্রভাবে সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে কোনো ধরনের শিল্প-কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই না করতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর শিল্পমালিকদের নির্দেশনা দিয়েছিল। কিন্তু এ নির্দেশনা উপেক্ষা করেই কিছু গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনা অমানবিক। দেশের বর্তমান দুর্যোগময় করোনা পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের সামাজিক অসন্তোষ দেখতে চাই না। পোশাক শ্রমিকদের বকেয়া বেতনভাতা দেয়ার বিষয়টি যত দ্রূত সম্ভব নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, নিয়মিত মেঝে পরিষ্কার করা, পুরো কর্মস্থল পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা, হাত ধোয়া এবং স্যানিটাইজেশনের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সরবরাহ করা এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে বিনামূল্যে কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) সরবরাহ করতে হবে।