পোশাক খাতে সংকটেও সম্ভাবনা
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ২৪, ২০২১ , ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
ধাক্কা কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে তৈরি পোশাক খাত। করোনায় প্রার্দুভাবে স্থগিত ও বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশও ফিরে আসছে। ফলে বাড়ছে রপ্তানি। এমন খবরে আমরা আশান্বিত হই। গতকাল ভোরের একটি খবরে বলা হয়েছে, করোনার প্রথম ঢেউয়ে গত বছরের এপ্রিলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময়ে ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি কার্যাদেশ স্থগিত হয়। পরবর্তী সময়ে স্থগিত হওয়া অর্ডারের ৯০ ভাগ ফিরে আসে। কিন্তু ৫০ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার শেষ পর্যন্ত আর ফিরে আসেনি। এরপর গত কয়েক মাসে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কমে যায়। চলতি বছরের মার্চে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বাড়তে থাকে। এপ্রিল পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত ছিল। যদিও এ সময় করোনার কারণে তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়নি। এ সময় বড় ধরনের রপ্তানি কার্যাদেশ স্থগিত বা বাতিল হয়নি। তবে কার্যাদেশ ও পোশাকের দাম কমেছে। আগামী কয়েকটি বছর দেশের পোশাকশিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের প্রয়োজনে অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল ভোক্তা চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের বহুমুখীকরণ বা বৈচিত্র্যসাধন, কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হলে পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। সেই প্রস্তুতি এখন থেকে নিতে হবে। অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিকূলতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাকশিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। বিশ^ পোশাক বাজার এখন ৬৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এর মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে। এ হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পারলেই ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এই টার্গেট পূরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন। পোশাক খাতের ২৫ লাখ ৬২ হাজার শ্রমিকের মধ্যে সাড়ে ৩ লাখের বেশি শ্রমিক করোনার এই সময়ে কাজ হারিয়েছেন। এই সময়কালে ২৩২টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা। একই সঙ্গে পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ আরো উন্নত করতে হবে।