প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রমে শতভাগ সচ্ছ্বতা নিশ্চিত হোক
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৩, ২০২১ , ১:৩৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত নিম্ন আয়ের প্রায় ৩৫ লাখ পরিবার এবং অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১ লাখ কৃষক পরিবারে নগদ সহায়তা কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নগদ অর্থসহায়তা বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ব্যাপক সংকটে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী নগদ টাকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। উদ্যোগটি প্রশংসার দাবিদার। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মুজিববর্ষে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে যাচাই-বাছাই করে প্রায় ৩৫ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়। তখন নানা অনিয়মের খবর গণমাধ্যমে উঠে আসছে। দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে বারবার এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। গত বছর হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবারের তালিকা করা হয়। তালিকায় একই মোবাইল নম্বর ভিন্ন নামে ব্যবহার হয়েছে সর্বোচ্চ ২শ বার। তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মুড়িয়াউক ইউনিয়নে ৪টি মোবাইল নম্বর ব্যবহার হয়েছে ৩০৬ জনের নামের পাশে। এছাড়া তালিকায় যুক্ত হয়েছে অনেক বিত্তশালী ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়স্বজনের নাম। রয়েছেন স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের একাধিক সদস্যও। ফলে তালিকা প্রণয়নে স্থানীয় পর্যায়ে অনিয়ম ও বিতরণে অদক্ষতা এবং সমন্বয়হীনতা পুরো কার্যক্রমকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। এমন খবর এবার দেখতে চাই না। নগদ সহায়তা হিসেবে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক, গৃহকর্মী, রিকশা-ভ্যানচালক, মোটর শ্রমিক, কর্মহীন বিভিন্ন পেশার ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৩৬ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ অর্থ বিতরণ শুরু করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে এসব পরিবারের কাছে নগদ, বিকাশ, রকেট এবং শিউরক্যাশের মতো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে জিটুপি (গভর্নমেন্ট টু পার্সন) ভিত্তিতে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে পৌঁছে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে অনিয়ম যেন আর না হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায়দের সহায়তা নিয়ে যে কোনো ধরনের অনিয়ম কঠোরভাবে দমনের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিরস্কার করেছেন। এখানে নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতির পরিমাণ কমাতে হলে লকডাউনটাকে আরো কার্যকর করতে হবে। আমরা মনে করি, দেশের সংকটকালে ঐক্যবদ্ধভাবে এই মহামারি মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষের পাশে যার যার অবস্থান থেকে দাঁড়ানো জরুরি। নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা না থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারেও সরকারের করণীয় রয়েছে। তালিকা তৈরিতে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি দূর করতে ভোটার আইডি কার্ড ও মোবাইল ফোন নম্বর সহায়ক হতে পারে। প্রশাসনিক দক্ষতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে কাজটি করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে যাদের সহায়তা প্রয়োজন তারা যাতে উপকৃত হতে পারেন তা নিশ্চিত করতে সহায়তাপ্রাপ্ত সবার তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা জরুরি।