বরিশাল সিটি ভোটে ফ্যাক্টর নারী ভোটার
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ১৯, ২০২৩ , ৬:১০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
বরিশাল অফিস : আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ভর করছে নারী ভোটারদের উপর। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এবার বরিশাল সিটিতে এবার নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন। অপরদিকে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন। অতীতের বিভিন্ন নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি পুরুষদের তুলনায় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। আর এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ইতোমধ্যে নারী ভোটারদের কাছে ছুটছেন বরিশাল সিটি নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থীর সহধর্মীনিরা। আর নারী ভোটাররাও তাদের কাছে পেয়ে উচ্ছসিত। তবে এবারের নির্বাচন যেহেতু ইভিএম-এ হবে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইভিএম সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা ও দিকনির্দেশনামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা বলছেন সচেতন নাগরিকরা।
নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়, বরিশাল সিটিতে মোট দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন। সেই হিসেবে পুরুষদের চেয়ে নারী ভোটার ১ হাজার ৩২০ জন বেশি। সেই হিসেবে আসন্ন সিটি নির্বাচনে নারী ভোটারদের একটি বড় ভুমিকা থাকবে প্রার্থীদের জয়ে। অতীতে দেখা গেছে, নারী ভোটাররা ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান। তাই ফলাফল নির্ধারণে বড় ফ্যাক্টর তারা। আবার নারী ভোটারের মধ্যে অনেকেই এবার জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। নতুন এই ভোটারদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন মাত্রার। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষিত ও বয়সে তরুণ এসব নারী ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে তুলনামূলক সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিবেন। তবে গ্রামীণ নারীদের কেউ কেউ হয়তো পরিবারের পুরুষ সদস্যদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভোট দিতে পারেন। আর এজন্য মেয়রসহ প্রায় সব প্রার্থীই নারী ভোটারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বরিশালে নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতের সহধর্মীনি লুনা আবদুল্লাহ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের পক্ষে তার সহধর্মীনি ইসমত আরা ইকবাল নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নারী ভোটারদের কাচ্ছে প্রত্যেকেই তার স্বামীর পক্ষে দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রæতি। আর নারী ভোটাররাও তাদের কাছে পেয়ে সব দাবী দাওয়া তুলে ধরতে পারছেন। নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা নারী ভোটার রেহেনা বেগম বলেন, অতীতে একমাত্র সাবেক মেয়র হিরণের স্ত্রী আমাদের কাছে নিয়মিত আসতেন এবং খোঁজখবর নিতেন। তার কাছে দাবী দাওয়া তুলে ধরলে তার সমাধানও হতো। এবার যেহেতু এখন পর্যন্ত দুইজন মেয়র প্রার্থীর স্ত্রীরা আমাদের কাছে আসছেন, তাই যাকে যোগ্য মনে হবে তাকেই ভোট দেব। কাশিপুর এলাকার নারী ভোটার কলেজ ছাত্রী বাধন আক্তার বলেন, এ বছরই ভোটার হয়েছেন তিনি। তবে যার কাছে গেলে এলাকার সমাধান পাওয়া যাবে তাকেই ভোট দিবেন তিনি। একই এলাকার নারী ভোটার আনোয়ারা বেগম বলেন, শুনেছি ইভিএম-এ ভোট হবে। তবে কিভাবে দেব তাই নিয়ে চিন্তায় আছি। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপসের সহধর্মীনি ইসমত আরা ইকবাল বলেন, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়নি। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে নারী ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। বিশেষ করে তরুন নারী ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন।
সচেতন নাগরিক কমিটি বরিশালের সভাপতি অধ্যাপক শাহ্ সাজেদা বলেন, নারীরা রাজনৈতিকভাবে আজ সচেতন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে নারীরা বরিশাল সিটি করপোরেশনে প্রতিনিধিদের জয়-বিজয় নির্ধারণে বিরাট ভূমিকা পালন করবেন। প্রার্থীদের জন্য এটি নতুন করে ভাবনার সুযোগ করেছে। মেয়রসহ সব প্রার্থীদের জয়লাভের জন্য নারী ভোটারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নারী ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম মেশিনে নারী ভোটাররা সঠিকভাবে ভোট দিতে পারবে বলে মনে হয়না। এজন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণা ও দিকনির্দেশনামূলক কার্যক্রম চালানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।