আজকের দিন তারিখ ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
লাইফ স্টাইল বাংলাদেশেও গড়ে উঠেছে ব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ’ম্যাক্স ব্যাগ’

বাংলাদেশেও গড়ে উঠেছে ব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ’ম্যাক্স ব্যাগ’


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৬, ২০২২ , ১:৫১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: লাইফ স্টাইল


দিনের শেষে ডেস্ক :  যেকোনো উৎসবেই একজন সচেতন মানুষ চায় নিজেকে অন্যের কাছে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে। আর সেজন্য সে বেছে নেয় ফ্যাশনেবল পণ্য। ব্যাগ হচ্ছে সেরকমই একটি ফ্যাশনেবল ও অপরিহার্য পণ্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও গড়ে উঠেছে ব্যাগ উৎপাদনকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। সেরকমই একটি প্রতিষ্ঠানের নাম হচ্ছে ‘ম্যাক্স’। ১৯৯৮ সালে ম্যাক্স ব্যাগ যাএা শুরু হয়। ২০১৭ সালে ফরিদপুরে এই ব্যাগের ফ্যাক্টরী গড়ে তুলেন মো. গিয়াস উদ্দিন খান। তখন থেকেই দেশে ব্যাপক সুনামের সাথে ম্যাক্স ব্যাগের পরিচিতি বাড়তে থাকে।

ম্যাক্স ব্যাগের পরিচালক মো. আকরাম খানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা এক্সপোর্ট বাজারকে বেশি প্রধান্য দিচ্ছি। কারণ আমাদের প্রোডাক্ট যেভাবে ম্যানুফ্যাকচার হয়, সেটা চায়নার কোয়ালিটির থেকেও ভাল। আমরা এটা নিয়ে ইউরোপ বা আমেরিকার বাজার ধরতে পারি। এটা নিয়ে পরিকল্পনাও আছে। বাংলাদেশে যা পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের টার্গেট কাস্টমার মধ্যম আয়ের মানুষ। উচ্চবিত্তরা আমাদের কাস্টমার না। তারা দেশের বাইরে গিয়ে কেনা কাটা করে। আমাদের ক্রেতা নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের মানুষ। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রোডাক্ট করতে পারিনি। কেন না সে বাজেটে করা সম্ভব না আর আমরা সেটি করবো না। অলরেডি আয়ারল্যান্ডের সেনাবাহিনীর জন্য ব্যাগ এক্সপোর্ট করেছি। ভারতেও কথা চলছে। আশা করি ফাইনাল হয়ে যাবে। ফাইনাল হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারব।

মো. আকরাম খান বলেন, বাবা বলতো মানুষকে মাছ দিও না, ছিপ দাও। যাতে সেটা দিয়ে তারা স্বনির্ভর হতে পারে। আমার বাবা দীর্ঘদিন হংকং এ ছিলেন। সেখানে ট্রেডিং ব্যবসা করতেন। ওখান থেকেই চায়ানার বিভিন্ন কোম্পানির সাথে সম্পর্ক হয়। বাবা একসময় খেলাল করে দেখলেন দেশে ব্যাগের তেমন সাপ্লায়ার নেই। তখন ব্যাগের ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।

ক্রেতা কেন ম্যাক্স ব্যাগ ক্রয় করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কম মূল্যে ভালো পণ্য দিই। আমরা প্রতি ব্যাগে ৩ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি দিই। যদিও ওয়ারেন্টি কার্ডের কোথাও লেখা নাই। কোভিড-১৯ এর প্রভাবে আমাদের ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। যা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তবে ধীরে ধীরে সে ক্ষতি পুষিয়ে নেবার চেষ্টা করছি। আমি ২০০৭ সাল থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করি। পরে ২০০৭ সালেই উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাই। পরে আবার ২০১৩-তে দেশে এসে দায়িত্ব নিই।

শো রুমের ব্যাপারে জানতে চাইলে ম্যাক্স ব্যাগের পরিচালক মো. আকরাম খান বলেন, শোরুম করলে লিমিটেড কাস্টামারের কাছেই শুধু যাবে। আমি চাই যাতে সবাই ক্রয় করতে পারে এবং ব্যবসা করতে পারে। যাতে সহজলভ্য হয়।
ম্যাক্স ব্যাগ থেকে এই কোম্পানী এখন নতুন ব্যবসার পরিকল্পনা করছে। করোনাকালীন সময়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে ম্যাক্স ফুড এন্ড বেভারেজের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। মো. আকরাম খান বলেন, আসলে এটি করোনা শিখিয়েছে। আমার কাছে প্রোডাক্ট আছে কিন্তু সেই প্রোডাক্টের ভ্যালু নাই। কেন না সব বন্ধ ছিল। কিন্তু ফুডে এমন হয়নি। সেই চিন্তা থেকেই ফুডের ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছি।

ম্যাক্স ব্যাগের পরিচালক বলেন, এলাকার শিক্ষা ও কর্ম দক্ষতার মানোন্নয়নে কাজ করে চলেছি। এলাকায় সরকারী স্কুল ছিল কিন্তু কলেজ ছিলো না। দূরে যেতে হত। আমরা করোনা আসার আগেই কলেজ স্থাপন করেছি। কলেজের নাম গিয়াস উদ্দিন খান কলেজ। এটা বাবার নামেই করা হয়েছে। সেই কলেজের সকল শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়েছি। সেই সাথে বই খাতা ড্রেস আমরা বিনামূল্যে দিই। তাদের কোনো কোচিং পড়তে হয় না। কলেজেই সব সুযোগ সুবিধাই আছে।

প্রসঙ্গত, ম্যাক্সে শুধুমাত্র লেডিস ব্যাগ বাদে সব ধরনের ব্যাগ আছে। বেবী ব্যাগ, স্কুল ব্যাগ, অফিস ব্যাগ, ব্যাগপ্যাক, ট্রলি কেস, ট্রাভেল ব্যাগ, ওয়েষ্ট ব্যাগ, চেষ্ট ব্যাগসহ সব ধরনের ব্যাগ আছে। সারাদেশেই ম্যাক্সের ব্যাগ পাওয়া যায়।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. আকরাম খানের হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে ম্যাক্স ব্যাগ। ম্যাক্স ব্যাগের মাধ্যমে একদিন বিশ্ব বাংলাদেশকে নতুনভাবে চিনবে। এমনটাই স্বপ্ন দেখে প্রতিষ্ঠানটি।