বাল্যবিবাহের হারে এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ১৪, ২০২০ , ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে ডেস্ক : করোনাকালে দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহের হার বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ। এমনকি বিশ্বে বাল্যবিবাহ বেশি এমন ১০টি দেশের তালিকাতেও উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। এমন অবস্থাকে অশনি সংকেত বলছেন বিশ্লেষকরা। পরিস্থিতি উত্তরণে তৃণমূল পর্যায়ে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর মাঝে আর্থিক প্রণোদনা, জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালু আর বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের কঠোর বাস্তবায়নের তাগিদ তাদের। ফিরোজা খাতুনের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটা নিমিষেই শেষ হয়, যখন চতুর্থ শ্রেণীর গণ্ডী না পেরোতেই বাবা-মা তার বিয়ে দেন। এতো অল্প বয়সে কেন বিয়ে? প্রশ্ন ছিলো ফিরোজার মায়ের কাছে। কিন্তু উত্তর আসলো চমকে দেয়ার মতো।
ফিরোজার মা বলেন, মানুষ বলে বিয়ের বয়স হয়েছে মেয়ের, বিয়ে দেন না কেন? তাই বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন সাভারের গীতা রানী পাল। কিন্তু নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয়ে যায়। তখন থেকেই বন্ধ পড়াশোনা। ফিরোজা, গীতার মতো দেশের প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ নারী শিশুকালেই কনে হতে বাধ্য হন। যাদের মধ্যে ১৫ বছরেরও আগে বিয়ে হয় ১ কোটি ৩০ লাখ নারীর। বাল্যবিবাহ পরিস্থিতি নিয়ে ইউনিসেফের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপও বলছে, গেল ৩ বছর ধরে দেশে বাল্যবিবাহের হার বেড়েছে। ২০১৭ ও ১৮ তে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে ৬০ শতাংশ নারী। গেলো ছয় মাসে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে দাবি উন্নয়নকর্মীদের। ইউনিসেফ কনসালটেন্ট পুলিক রাহা বলেন, কোভিড আসার পরে পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করে ফলে তারা মেয়েদেরকে বিয়ে দিতে শুরু করলেন।
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে ২ বছরের সাজা আর ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। আইনজীবীদের দাবি, আইন থাকলেও অভিযোগ নিয়ে থানায় যায় না কেউ। এতে অপরাধীরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইনজীবী মিন্টু কুমার বলেন, কোন মামলা দেখা যায় না আদালত পর্যন্ত এসেছে। হাতে গোনা দুই একটা হতে পারে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি নিশ্চিত না হলে, ২০২১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহের হার এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে মনে করছেন তারা।