আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে হটানোই একমাত্র লক্ষ্য মমতার

বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে হটানোই একমাত্র লক্ষ্য মমতার


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


দিনের শেষে ডেস্ক :   মোদী সরকারকে হটাতে বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সম্প্রতি নিজের লেখা এক প্রবন্ধে মমতা জানান, নরেন্দ্রমোদীকে ক্ষমতা থেকে হটানোই তার একমাত্র লক্ষ্য। এ কাজে কংগ্রেসকে সাথে নিতেও আপত্তি নেই তার। দিল্লির ডাক নামের ওই প্রবন্ধে মমতা লিখেছেন, ‘ দেশ গড়ার দায়িত্বা পালন করতে হবে। বিজেপি বিরোধী সব দলের উচিত একজোট হওয়া।’ বিরোধী জোট তৈরির সম্ভাব্য ‘রোডম্যাপ’ও ঠিক করে দিয়েছেন মমতা। ‘বিকল্প মঞ্চকে শক্তিশালী করতে হবে। সেই মঞ্চ হবে নীতির ভিত্তিতে, কর্মসূচির ভিত্তিতে’,- প্রবন্ধে লিখেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, মমতা জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যায় ‘দিল্লির ডাক’ প্রবন্ধটি লিখেছেন। এতে তুলে ধরেছেন বাংলার প্রতি দিল্লির বঞ্চনার কথা। ধর্ম-নিরপেক্ষ, প্রগতিশীল, সুস্থ সমাজ গঠনে তার সরকারের সাফল্য গাঁথাও রয়েছে এতে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি রাজ্যের জন্য কীভাবে অনেক নতুন রেলপ্রকল্প আদায় করে এনেছিলেন, তারও খতিয়ান দিয়েছেন মমতা।

 

বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলাপ-আলোচনা চলছে। কংগ্রেস এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল হলেও রাহুল গান্ধীর যোগ্যতা নিয়ে খোদ তার দলের মধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে। রাহুল গান্ধীর দল পরিচালনা নিয়ে কপিল সিবাল, গুলাম নবি আজাদের মতো প্রথমসারির নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ওই রাজ্যে কংগ্রেস এখন ভাঙনের মুখে পড়েছে। এর জন্য রাহুল গান্ধীর দিশাহীনতাকেই দায়ী করছেন অনেকে। এসময় বিজেপি বিরোধী নেতা হিসেবে দ্রুত সামনের সারিতে উঠে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূলের বিশাল সাফল্যের পর ত্রিপুরা, মনিপুর ও গোয়াতেও তৃণমূলের শক্তি বাড়ছে। এ অবস্থায় বিজেপি বিরোধী শিবিরে আশার আলো জাগাতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বর্তমানে ভারতীয় সংসদীয় রাজনীতিতে তার রাজনৈতিক ট্র্যাক রেকর্ডের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো কেউ নেই।

কারণ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, কংগ্রেসের ভেতরে যেভাবে ঘরোয়া কোন্দল বাড়ছে, তাতে তাদের পক্ষে বিজেপির মতো সংগঠিত শক্তির মোকাবিলা করা অসম্ভব।

এ মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের কাছে তিনি এখন সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি।

 

কংগ্রেস নেতারা অবশ্য এটা মানতে রাজি না। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের মন কষাকষি চলছে। এর জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইটে লিখেছেন, ‘রাহুলের মতো পার্ট টাইম রাজনীতিকের কাছে তারা কোনও জ্ঞান নেবেন না।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য তার লেখায় সৌহার্দ্যের বার্তা দিয়ে লিখেছেন, ‘আমরা কখনও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মঞ্চের কথা ভাবছি না। তবে বিজেপির ব্যর্থতা তুলে ধরে বিরোধীদের জোটের নেতাদের সতর্ক করে মমতা বলেন, ‘অতীতে কংগ্রেস দিল্লিতে বিজেপেকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত দু’টি লোকসভা নির্বাচনই তার বড় প্রমাণ। দিল্লিতে লড়াই না থাকলে মানুষের মনোবল কমে যায়। এ ছাড়াও লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যগুলি থেকে বাড়তি কিছু ভোট পেয়ে যায়। এবার এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘নোটবন্দি থেকে জিএসটি, সিএএ, এনআরসি, কৃষক আন্দোলন ইত্যাদি ইস্যুতে মমতা সব থেকে বেশি সরব। ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনে মোদী-শাহর দ্বৈরথ থামিয়ে সারা দেশে বিজেপি বিরোধী ভোটারদের মধ্যমনি হয়ে উঠেছেন মমতা। বিশেষ করে সংখ্যালঘু এবং দলিত ভোটারদের কাছে। তবে বিরোধী ঐক্য গড়ে না উঠলে ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার সুফলটা বিজেপি পেয়ে যেতে পারে। ’

অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিরোধী জোটের নেতৃত্ব কে দেবে, এখন সেটা ফয়সলা হওয়ার বিষয়ই নয়। বিরোধী জোটটাই তৈরি হয়নি। যারা বিরোধী জোটের গল্প ফাঁদছে, তাদের মধ্যে এখনও মতৈক্য তৈরি হয়নি। আগে মতৈক্য তৈরি হোক। তারপর বিরোধী জোটের নেতা কে হবে, সেটা ঠিক হবে। আজ বললাম, কাল জোট তৈরি হয়ে গেল, ব্যাপারটা এরকম নয়।’

তবে জোট নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্য বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, ‘আগেও এরকম চেষ্টা হয়েছে। কেউ ন’মাস, কেউ ছ’মাস দেশের প্রধানমন্ত্রিত্ব করেছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা তো মুদিখানার দোকানের মতো হয়েছিল।’