ভারতে মাদার তেরেসার সংস্থার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১ , ৫:৩০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে ডেস্ক : ভারতে মাদার তেরেসা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অব চ্যারিটির সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। তদন্তের কথা বলেই সবক’টি অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেন বন্ধ করার কথা জানানো হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন এ খবর জানায়। তবে কলকাতায় মাদার হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ খবর নিয়ে তারা কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। তবে ভারতের কেন্দ্রের এ পদক্ষেপ নিয়ে ইতোমধ্যে টুইট করে সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোন তদন্তের প্রয়োজনে এ সিদ্ধান্ত- তা জানা না গেলেও সম্প্রতি গুজরাটে একটি বিতর্কে জড়ায় তেরেসার সংস্থা। ধর্মান্তরণের অভিযোগে মোদির রাজ্যে মিশনারিজ অব চ্যারিটির বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের হয়। গুজরাটের বডোদরা শহরে ওই সংগঠনের যে হোম রয়েছে, তার বিরুদ্ধে ধর্মান্তরণ ছাড়াও হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়- এমন কাজও ওই হোমে হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয় সংগঠনের তরফে। তাদের দাবি, ওই হোমে কোনোভাবেই জোর করে কারও ধর্মান্তরণ করা হয়নি। এ অভিযোগ ওঠার পরও কলকাতায় মাদার হাউসে যোগাযোগ করা হলে এর কর্মকর্তারা জানান, এ নিয়ে তারা কিছু বলতে চান না।
পাঞ্জাবের এক তরুণীকে জোর করে এক খ্রিস্টান যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠেছে বডোদরার ওই হোমের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় পুলিশ কমিশনার সমশের সিং জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আলাদা করে তদন্ত চলছে। আর জেলা সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা ময়ঙ্ক ত্রিবেদীর অভিযোগ, ওই হোমে হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে এবং হোমের অল্পবয়সি মেয়েদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়ে থাকে। গুজরাতের ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন, ২০০৩-এর আওতায় মকরপুরা থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছেন ময়ঙ্ক। তার বক্তব্য, গত ৯ ডিসেম্বর জেলার শিশু কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওই হোমে গিয়েছিলেন তিনি। এফআইআরে তিনি বলেছেন, সেখানে তিনি দেখেছেন, হোমের মেয়েদের জোর করে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ানো হয়, তাদের গলায় ক্রস পরতে বলা হয় এবং তাদের খ্রিস্টানদের প্রার্থনায় অংশ নিতেও বলা হয়।
ময়ঙ্কের আরও অভিযোগ, হিন্দু মেয়েদের আমিষ খাবারও খেতে দেয়া হয় ওই হোমে। তার বক্তব্য, এভাবেই প্রকারান্তরে মিশনারিজ অব চ্যারিটি কর্তৃপক্ষ হোমের মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরণের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। ময়ঙ্ক জানিয়েছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ওই সংগঠন নিয়মিত হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। পুলিশ ময়ঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ভারতের কেন্দ্রের এ পদক্ষেপ কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালে কলকাতায় মাদার তেরেসা মিশনারিজ অব চ্যারিটি স্থাপন করেন। কলকাতার পাশাপাশি ভারতে এবং দেশের বাইরেও বহু জায়গায় সক্রিয় এ চ্যারিটি।
ভারতে ২৪৩টি হোম রয়েছে সংস্থার। কলকাতায় প্রধান কার্যালয় সরকারিভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাওয়া হলেও সংস্থার এক সদস্য বলেন, ‘পুরো দেশে (ভারত) এবং বিদেশে অনেক সেবামূলক কাজের সঙ্গে আমরা যুক্ত। হাজার হাজার অসুস্থ মানুষের সেবা চলে। কিন্তু এর ফলে সেই রোগীদের খাবার থেকে ওষুধ সরবারহ সমস্যার মুখে পড়বে।’