মহামারী করোনা যুদ্ধে নেমেছেন ‘ নাফিসা বাংলাদেশ’
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১৯, ২০২০ , ৩:০৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : শুরুটা পথশিশুদের নিয়ে। তাদের জন্য আদাবর ও কামরাঙ্গীরচরে দুটি স্কুল গড়েছিলেন নাফিসা আনজুম খান। নাম দিয়েছিলেন ই-স্কুল। তাদেরকে নৈতিক শিক্ষা দেয়াই এই স্কুলের কাজ। ভালোই চলছিল স্কুল দুটি। করোনার ছোবলে হঠাৎ ছন্দপতন। সরকারি ছুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের সব ধরনের কার্যক্রম। তবে, বসে থাকার ব্যক্তি নন নাফিসা। সবাই যখন ঘরবন্দি ঠিক তখনি নিন্ম আয়ের মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন তিনি। সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ বেকার জীবন-যাপন করছেন সংকটের শুরুতেই নিজ স্কুলের বাচ্চাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ান তিনি। ২৭ মার্চ ছিলো নাফিসার জন্মদিন। দিনটি উৎযাপন না করে সেই টাকা দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীসহ ৮০০ পরিবারদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। এর কিছুদিন পরেই তার কর্মন্থল থেকে তিন মাসের আগাম বেতন পান। সেই টাকা নিয়ে এবার বড় পরিসরে নামেন তিনি। ১৬শ মানুষকে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। খাবার ক্রয় এবং প্যাকেটিং -এর কাজে সহোযোগিতা পান তার পরিবার ও প্রতিবেশিদের। প্রথম দিকে নিজ এলাকাতে খাবার বিতরণ শুরু করলেও বর্তমানে মোহাম্মদপুর ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন একালায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন নাফিসা নিজে। এছাড়াও তার বাসায় গিয়ে খাবার নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এই পুরো কার্যক্রম চলে ফোনে। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বড় ভূমিকা রেখেছে। তার এই খাবারের গাড়ির খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পরার কারণে সারা দেশে থেকে খাবারে জন্য ফোন আসছে। তবে তার খাবার সরবরাহ করার এলাকা আপাতত রাজধানী। এই খাদ্য সরবরাহ শুরুটা কোথা থেকে তা জানাতে গিয়ে নাফিসা বলেন, শুরুটা আমি নিজ অর্থায়নে করলেও আমার এই উদ্যোগ দেখে অনেকেই আমাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসছেন। আমার পরিবার, প্রতিবেশিসহ কাছের সবাই এগিয়ে আসছেন। আমার সাবেক কর্মস্থল গ্রামীণফোনের সহকর্মীরা আমাকে বিভিন্নভাবে সহোযোগিতা করছেন। খাবার মানুষের বাসায় পৌঁছে দিতে নাফিসাকে সাহায্য করছে তার বাসার একাধিক নারী ও কিশোরি। তারা খাবারগুলো প্যাকেট করে ফোনে কথা বলে নিশ্চিত করে। এরপরেই তারা একেক দিন একেক এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার। বাসায় পৌঁছে দেয়া প্রতিটি প্যাকেটে থাকে চাল, ডাল, তেল, আলু, স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ। নাফিসা বলেন, এধরনের কথাকে বা মানুষের নেতিবাচক কথাকে আমি মাথায় নেই না, আমি শুধু চিন্তা করি আমার মানুষকে খাবার পৌছায়ে দিতে হবে। যতখন পর্যন্ত আমি মানুষের দাড়ে খাবার পৌছাতে পারব আমি খুশি থাকব। পেছনে যে যাই বলুক আমি তাতে খুব একটা বিচলিত হই না। আমি মানুষের জন্য কাজ করছি এবং করে যাব ” মানুষের কটূকথা দূরে ঠেলে সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে করোনা মোকাবেলায় কাজ করার আহ্বান জানান নাফিসা। বর্তমানে নাফিসা আনজুম খান Sini care Bangladesh এর ব্র্যান্ড স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে নাফিসা বলেন, লকডাউনের মধ্যে অনেক রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়ি চলতে সমস্যা দেখা দিলে তারা আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে। এছাড়াও খাবার বিতরণ করতে গিয়ে করো সমস্যা হলেও তারা সাহায্যে এগিয়ে আসেন।