মালিকদের চাপ কমাতে একবারই সুদ আরোপ
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২, ২০২০ , ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: Uncategorized,অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে অর্থ-বাণিজ্য প্রতিবেদক : রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে প্রস্তাবিত তহবিলের সুদ নির্ধারণ প্রক্রিয়া আরো শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২ শতাংশ হারে একবারই সুদ আরোপ করা হবে। অর্থাৎ সরল সুদের ফর্মুলা বাদ দিয়ে ২ শতাংশ ফি হিসেবে একবারে যে সুদ আসবে সেটা ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাসের কিস্তিতে ভাগ করে আদায় করা হবে। এতে সরল সুদে দুই বছরে যে সুদ আসত, সেটা একবার আরোপের ফলে তা অর্ধেকে নেমে আসবে। উদ্যোক্তাদের চাপ কিছুটা লাঘবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন। সেই তহবিল নিয়ে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনা চলছে। এরই মধ্যে সরকার থেকে জানানো হয়েছে, এই তহবিল থেকে অর্থ পেতে গুনতে হবে ২ শতাংশ সরল সুদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ২ শতাংশ সরল সুদে ৫০০০ কোটি টাকার ওপর দুই বছরে ২০০ কোটি টাকা সুদ হয়। কিন্তু সেটা ওয়ান টাইম বা একবারই আরোপ করা হলে তা ১০০ কোটিতে নেমে আসবে। তবে যেহেতু এই সুদ-আসল ফেরত দিতে মালিকরা সময় পাবেন দুই বছর, ফলে প্রকৃতপক্ষে সুদের হার হবে ১ শতাংশ। অর্থাৎ ১ শতাংশ সরল সুদে ঋণ পাবেন উদ্যোক্তারা। এ তহবিল গঠনের বিষয়ে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতেও ২ শতাংশ সরল সুদ আরোপের প্রস্তাব করা হয়। তবে গতকাল বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকে এ তহবিলের ঋণে ২ শতাংশ সুদ একবারই আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা সার্ভিস চার্জ হিসেবে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দিতে হবে। আন্ত মন্ত্রণালয়ের ওই বৈঠকে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্যসচিব ড. জাফর উদ্দীন, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজকের মধ্যে এ তহবিল গঠনের সংশোধিত চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হবে। ওই চিঠি আসার পর তহবিল গঠনের কার্যক্রম শুরু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমে ২ শতাংশ সরল সুদের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরল সুদ বললে দুই বছরের জন্য সুদারোপ করতে হবে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাব ছিল, ২ শতাংশ দিলে এটা একটু বেশি হয়ে যায়। তাই ১ শতাংশ করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা এখন আর করা যাবে না, কারণ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন হয়ে গেছে। তাহলে যেটা ২ শতাংশ ছিল সেটা ওয়ান টাইম ফি হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। তাহলে তা ১০০ কোটি টাকা হয়ে যাবে। এর উদ্দেশ্য হলো, মালিকদের ওপর চাপ কমানো।’