মিয়ানমারে মৃত্যুসংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়ালো
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৪, ২০২১ , ১২:১৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে ডেস্ক : মিয়ানমারে প্রায় দুই মাস ধরে চলা সেনাবিরোধী বিক্ষোভে মৃত্যুসংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়িয়েছে। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এই তথ্য জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে। এএপিপি জানায়, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ৫৫৭ হয়েছে। গ্রেপ্তার বা আটক ব্যক্তির সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। সেনা সরকার ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করলেও আন্দোলনকারীরা ভিপিএনসহ বিকল্প পদ্ধতিতে ফেসবুক ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে দেশটিতে মোবাইল ডেটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
গত শুক্রবার থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও। ফলে, দেশটিতে ইন্টারনেট ব্যবহার কমে গেছে। তবে, এখনও কিছু পোস্ট ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে। সেনা কর্তৃপক্ষের দমন-নিপীড়নের পরেও প্রতিবাদকারীরা প্রতিদিন রাস্তায় নামছেন, বিক্ষোভ করছেন। রাতেও মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। একইসঙ্গে অনলাইনে ইস্টার ডিমের ছবি পোস্ট করেছেন। ছবির সঙ্গে তারা জুড়ে দিয়েছেন সেনাশাসনবিরোধী নানা স্লোগান।
মিয়ানমারে সেনাশাসনবিরোধীরা তাদের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজ ইস্টার সানডেতে ‘ইস্টার এগ’ তৈরি করেছেন। এই ‘ইস্টার ডিম’ সেনাশাসনের প্রতি অবজ্ঞা-অবহেলা প্রদর্শনের প্রতীক। ডিমের ওপর যেসব স্লোগান লেখা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- ‘আমরা অবশ্যই জয়ী হব’, ‘বসন্ত বিপ্লব’, ‘বিদায় হও এমএএইচ (সেনাপ্রধান)’ ইত্যাদি। সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় প্রায় ৪০ জন সেলিব্রিটিকে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এই দলে সামাজিক মাধ্যম তারকা, সংগীতশিল্পী, মডেল রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে মতবিরোধ প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগে তাদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেG মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর সেখানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সেনা কর্তৃপক্ষ সহিংস ব্যবস্থা নেয়া শুরু করে। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের মুখেও দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা টানা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা দেশবাসীর প্রতি জান্তার বিরুদ্ধে ‘গেরিলা কায়দায় প্রতিরোধ’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় বইছে। মিয়ানমারের জান্তার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ নানাভাবে চাপ বাড়িয়ে চলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।