মৃত্যুর আগে ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’র শিকার হয় তনু
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১২, ২০১৬ , ২:০৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////,জাতীয়
কুমিল্লা: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী নিহত সোহাগী জাহান তনু মৃত্যুর আগে ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’র শিকার হয়েছিল। তবে, অধিকতর তদন্তের জন্য তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি ময়নাতদন্তকারী বোর্ড।
রোববার (১২ জুন) দুপুর পৌনে ১টায় তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে ময়নাতদন্তকারী বোর্ড।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন কুমিল্লা সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে ময়নাতদন্তকারী বোর্ড কর্তৃপক্ষ। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের কর্মচারী মো. ফারুক এ রিপোর্ট সিআইডির অফিসে পৌঁছে দেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, মৃত্যুর আগে তার সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স হয়েছে। যেহেতু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য ১০ দিন পর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছিল। আর এই ১০ দিনে তার মরদেহ পচে গিয়েছিল। পচা-গলা মরদেহ থেকে নতুন করে কোনো আঘাতের চিহ্ন বোঝা সম্ভব হয়নি। ফলে, অধিকতর তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার জন্য তদন্তকারী সংস্থাকে পরামর্শ দিয়েছি।
গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি ঝোপঝাড় থেকে সোহাগী জাহান তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে পুলিশ, তারপর ডিবি পুলিশ, সর্বশেষ বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে। গত ২৮ মার্চ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য তনুর মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ মার্চ তনুর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
এদিকে, ৪ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে আদালতের অনুমতি নিয়ে তনুর মরদেহে থাকা কাপড়-চোপড় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডি ঢাকায় তাদের পরীক্ষাগারে পাঠায়। পরে প্রকাশিত ডিএনএ প্রতিবেদনে তনুর কাপড়ে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। তনুর মৃতদেহে মোট ৪ জনের ডিএনএ পাওয়া যায়।
এর মধ্যে একটি তনুর নিজের রক্তের। অন্য ৩টি তিন পুরুষের। সোহাগী জাহান তনুর প্যান্টি, কাপড়, ভেজাইন্যাল সোয়াব, শরীরের অংশবিশেষ ও রক্তের ডিএনএ প্রতিবেদনে ৩ ব্যক্তির বীর্য পাওয়া যায়। প্যান্টিতে থাকা রক্ত তনুর বলেও নিশ্চিত হওয়া যায়।
সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম বলেন, আমরা ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হয়েছি, তনু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।
সিআইডির সূত্রমতে, ‘ধর্ষণের আলামত নিশ্চিত হতে সিআইডি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিল। ভেজাইনাল সোয়াব (ফ্লুইড) নমুনা হিসেবে সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠানোর জন্য ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছিল।
তারা সিআইডিকে জানান, পরীক্ষায় তারা আলামত পাননি। তাই নমুনা সংরক্ষণ করা হয়নি। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে তনুর মরদেহে থাকা কাপড়-চোপড় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়।
৭ মে দুপুর ১২টার দিকে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহার কাছে হস্তান্তর করে সিআইডির কুমিল্লার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোশারফ হোসেন।