আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য রংপুরে আমন ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা

রংপুরে আমন ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ২, ২০২১ , ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


রংপুর প্রতিনিধি : চলতি মৌসুমে রংপুরে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। রংপুরের ৮ উপজেলায় রোববার ওই খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সিকি ভাগও পূরণ হয়নি খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান। ৭ উপজেলায় এক ছটাক ধানও সংগ্রহ হয়নি। ফলে রংপুরের খাদ্য গুদামগুলো খালি থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য অভিযান ১৫ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তার দপ্তর সূত্র জানায়, রংপুরের ৮ উপজেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৩৮২ মেট্রিক টন, সেখানে কেনা হয়েছে মাত্র ২ মেট্রিক টন। অন্যদিকে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৬৩৮ মেট্রিক টনের বিপরীতে কেনা হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩৯১ মেট্রিক টন। সূত্র জানায়, এবার আমন মৌসুমে রংপুরে ৮ উপজেলার জন্য খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় খাদ্য বিভাগ। কিন্তু খাদ্য বিভাগের নিবন্ধিত অটোরাইস মিলসহ হাসকিং মিলার মালিক তিনশ’র বেশি থাকলে চুক্তি করেছেন মাত্র ৬৩ জন চালকল মালিক। এরপরও চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকরা চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করেননি।
গত বছর বোরো মৌসুমেও রংপুর জেলায় ধান-চাল ক্রয় অভিযান ব্যর্থ হয়। সেবারও খাদ্য বিভাগ ঘোষণা দিয়েছিল যেসব চুক্তিবদ্ধ মিলার চুক্তি করেও চাল দেয়নি তাদের আর্নেস্টমানি বাজেয়াপ্তসহ চুক্তি বাতিল করা হবে। পাশাপাশি নতুন করে আর চুক্তি করা হবে না বলেও জানানো হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত খাদ্য বিভাগ রহস্যজনক কারণে নিজেই সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। একইভাবে খাদ্য বিভাগের নির্ধারণ করা দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা এবার ধান বিক্রি করতে রাজি হয়নি। তার ওপর খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য এবং হয়রানির কারণে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফলে খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযানের এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে কথা হয় রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদেরের সঙ্গে। তিনি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সফল করা যায়নি বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, রোববার ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযানের সীমা ছিল। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় এই সংগ্রহ অভিযান সরকারিভাবে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বাস্তব পরিস্থিতিতে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ বিক্রির জন্য কৃষকের ঘরে ধানের মজুদ নেই। অনেক মিলার ধানের অভাবে তাদের মিলে চাল উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি হলেও সংগ্রহ অভিযান বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ওই খাদ্য কর্মকর্তাও তাই মনে করেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাত্র ৬৩ জন মিলারের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। তবে তারাও চাল পুরোপুরি দিতে পারেনি। বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় কৃষকরাও ধান বিক্রি করেনি।