রক্তপাত, খুনের জন্য দায়ী কাদের মির্জা: বাদলের পরিবার
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ১৩, ২০২১ , ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি
নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের নিঃশর্ত মুক্তি চাইলেন তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাকলীসহ পরিবারের সদস্যরা। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চরকালী গ্রামে নিজ বাড়িতে বাদলের মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় তার দুই বোন ও মা-সহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তারা অভিযোগ করেন, “আবদুল কাদের মির্জা বাদলের জনপ্রিয়তা সহ্য করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে প্রশাসনের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করিয়েছেন। অথচ আমাদের লোকজন খুন হয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ এখনও সে মামলা রেকর্ড করেনি। উল্টো আমাদেরকে মামলায় ফাসিয়ে হয়রানি করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাকলী, তার স্বামীকে নির্দোষ দাবি করে স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি চান। তিনি আরও বলেন, মির্জা কাদেরের যড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিনাকারণে তার স্বামী আজ জেলে। কোম্পানীগঞ্জে সকল সংঘর্ষ, সহিংসতা, রক্তপাত খুনের জন্য একমাত্র দায়ী আব্দুল কাদের মির্জা। কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জের সকল অপরাজনীতির হোতা বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বাদলের বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, যাদের লোক মারা গেছে তাদের কোনও মামলা নেওয়া হচ্ছে না, পুলিশ টালবাহানা করছে। কিন্তু যাদের লোক মারা যায়নি তাদের মামলা নেওয়া হয়েছে। বাদলের মা আরাধন বেগম বলেন, একেবারে মিথ্যা, বানোয়াট অজুহাতে বাদলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকল রক্তপাত, সংঘাত ও খুনের জন্য একমাত্র দায়ী কাদের মির্জা। এ সময় তিনি দ্রুত কাদের মির্জাকে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের ওপর মহলের কাছে দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বড় বোন ফাতেমা আক্তার বকুল ও ছোট বোন আমেনা বেগম।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। পরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভায় আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা সভার একেবারে শেষ মুহূর্তে ককটেল ও গুলি ছোঁড়ে এবং সভার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটি নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। সভাস্থল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এক হয়ে মির্জা কাদেরের অনুসারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর থেমে থেমে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের দু’গ্রুপের অনুসারীরা বসুরহাট বাজারের বিভিন্নস্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, গোলাগুলি ও ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত হন ওসি মীর জাহিদুল হক রনিসহ চার পুলিশ। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ সিএনজি চালক ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মী আলাউদ্দিন (৪০) মারা যান।