আজকের দিন তারিখ ২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ১৪ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// রেলের ক্ষতি করলে উপযুক্ত শাস্তি : প্রধানমন্ত্রী

রেলের ক্ষতি করলে উপযুক্ত শাস্তি : প্রধানমন্ত্রী


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২০, ২০২৩ , ৫:৪২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : বিএনপির অতীতের আন্দোলনে রেলের বগি পুড়িয়ে দেওয়া, রেল লাইন উঠিয়ে ফেলার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবার এই ধরনের কর্মকাণ্ড করলে ধরে ধরে শাস্তি দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি তিনি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

এসময় কেউ যেন রেলের ক্ষতি করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাই সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, রেল এমন একটা চলাচল ব্যবস্থা, যেটা সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকে। আর একইসঙ্গে অল্প খরচে অনেক বেশি পণ্যও পরিবহন করা যায়, যাত্রীও পরিবহন করা যায়।

‘আমাদের দুর্ভাগ্য হলো, বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এই রেল লাইন বন্ধ করে দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় এসে রেল বন্ধ করবে কেন, রেল লাভজনক না লোকসান। কাজেই বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শে এই রেল তারা বন্ধ করে দেওয়ার পদক্ষেপ নেয়। রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় দেয় কিন্তু তাদের পুরো টাকাও পরিশোধ করেনি। বিভিন্ন এলাকায় রেললাইন বন্ধ করে দেয়, সবই তারা বন্ধ করা শুরু করেছিল। ঠিক সেই সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলকে উন্নত করার পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, দ্বিতীয়বার ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই, রেলের আলাদা মন্ত্রণালয় না করে দিলে বাজেটে টাকা থাকবে না। আর রেলকে উন্নত করতে পারব না। অনেক প্রতিষ্ঠানই বিএনপি, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা এসে চালু করি, তার মধ্যে রেলও আছে।

 

তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে আমি যখন যমুনার ওপর সেতু নির্মাণ করি, এই সেতুর মূল নকশায় রেললাইন ছিল না। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, এর সঙ্গে রেললাইন থাকতে হবে। তখনও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বাধা দিয়েছিল। বলেছিল ভায়াবল (টেকসই) হবে না, আমি বলেছিলাম হবে। আমরা বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে সেতু সংযোজন করি। মজার বিষয় হলো, যখন দেখল যে এটা খুবই ভায়াবল, তখন সেই ওয়ার্ল্ড ব্যাংকই টাকা দিল আলাদা ডেডিকেটেড রেল সেতু করার জন্য। আমার দেশ আমার চিন্তা, কী করলে দেশের মানুষের মঙ্গল হবে সেভাবে কাজ করব।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বিএনপি হতে দেবে না, কারণ ২০০৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল সেখানে মাত্র ২৯ সিট পেয়েছিল। কারণ, ২০০১ সাল থেকে তাদের দুঃশাসন, লুটপাট, সন্ত্রাস, অপকর্মের কারণে মানুষ তাদের ভোট দেয়নি। তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। ’১৩ সালে বিএনপি নির্বাচন হতে দেবে না, নিজেরাও করবে না। আসলে ২০০৮ এর নির্বাচনে তারা ভোটই পায়নি, আর ওই নির্বাচন নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছিল। শুরু হয়ে গেলো আগুন সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা। বাস, গাড়ি চলছে, আগুন দিচ্ছে, প্রাইভেট কার, সিএনজিতে আগুন দিচ্ছে, আর রেল। নতুন নতুন বগি কিনেছি, রাস্তা করেছি, তাতে আগুন দেয়। প্রায় ২৯ জায়গায় তারা রেলে আগুন দেয়। বগি ও ইঞ্জিন ধ্বংস করে। আসলে বিএনপি হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী দল, সন্ত্রাস ছাড়া কিছু বোঝে না।

 

তিনি বলেন, এই দলের (বিএনপি) সৃষ্টিকর্তা জিয়াউর রহমান, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার সঙ্গে সে জড়িত। জাতীয় চার নেতা হত্যার সঙ্গে জড়িত। সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা যারা অফিসার ছিলেন, একে একে তাদের হত্যা করে। তার স্ত্রী যখন ক্ষমতায় আসে, সে এই মানুষ খুন করা ছাড়া আর কিছু বুঝত না। এই সন্ত্রাসী দল, তাদের কাজই হচ্ছে ধ্বংস করা। তিন হাজার ৮২৪টি বাস, গাড়ি, ট্রাক তারা পুড়িয়েছে। যাত্রী, ড্রাইভার, হেলপার পুড়ে কাঠ হয়ে গেছে। আর সেই সঙ্গে রেল, লঞ্চ, সরকারি অফিস, ভূমি অফিস পুড়িয়েছে। অর্থাৎ ধ্বংস করা, সেই সাথে প্রায় ২০ হাজার গাছ তারা কেটেছে। এই ধ্বংস করাটাই নাকি তাদের আন্দোলন। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারাটা তাদের আন্দোলন। এই রেলকে আবার তারা ধ্বংস করতে চেয়েছিল।

জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করেছে বলেই দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই জনগণকে বলবো সন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে তারা যেন নিজেদের রক্ষা করে। এদের সম্পর্কে যেন সচেতন থাকে। কারণ এরা ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি নয়। এরা মানুষকে কিছু দিতে পারে না। এরা লুটপাট, দুনীতি ও নিজেদের আখের গোছাতে পারে।

 

তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং করতে পারে। খালেদা জিয়ার ছেলের মানি লন্ডারিংয়ের ৪০ কোটি টাকা আমরা উদ্ধার করেছি। আরও ওদের অনেকের টাকা ফ্রিজ হয়ে আছে বিভিন্ন দেশে। আমরা সেগুলো আনার চেষ্টা করছি। লুটপাট, সন্ত্রাস, বোমাবাজি ছাড়া আর কিছু পারে না। এদের হাত থেকে দেশবাসী রক্ষা পাক সেটাই আমরা চাই।