দিনের শেষে ডেস্ক :  লাদাখের গালওয়ান সীমান্তে থেকে সেনা সরাতে সম্মত হয়েছে চীন ও ভারত। মঙ্গলবার সেনা কমান্ডার পর্যায়ে দীর্ঘ বৈঠকের পরে  দেশ দুটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। সম্প্রতি গালওয়ান সীমান্তে চীন-ভারত সেনা সংঘর্ষের পর দু দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। ওই সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত এবং আরও ৭৬ জন আহত হয়েছিল। বেশ কিছু চীনা সেনা নিহত হয়েছে বলেও জানা গেছে। দু দেশের সীমান্ত সংঘাত কমিয়ে আনতেই মঙ্গলবার ওই বৈঠকের আয়োজন করেছিল চীন ও ভারত। আপাতদৃষ্টিতে ওই বৈঠক সফল হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সেনা কমান্ডার পর্যায়ে দীর্ঘ বৈঠকের পরে চীন-ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পূর্ব লাদাখে যতগুলি এলাকা নিয়ে পরস্পরর মধ্যে বিরোধ রয়েছে, সেই সব এলাকা থেকে দুই বাহিনীই পিছিয়ে যাবে।

তবে এ নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। নির্ভরযোগ্য সেনা সূত্রগুলি জানিয়েছে, পূর্ব লাদাখ থেকে ঠিক কীভাবে দুই দেশের বাহিনী পিছিয়ে যাবে এবং কবে থেকে বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে, সেসব খুঁটিনাটি দুই দেশের সেনাবাহিনী মিলে ঠিক করবে।

চীনের সরকারি সংবাদপত্র পিপলস ডেইলিও সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে এ নিয়ে টুইট করেছে। পত্রিকাটি বলছে, দুই সেনা কমান্ডারের মধ্যে এই দ্বিতীয় বৈঠকটি প্রমাণ করে যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই মতপার্থক্য ও উত্তেজনা কমাতে চাইছে দুই দেশই।

মে মাসের গোড়া থেকে শুরু হওয়া সীমান্ত সংঘাতের মধ্যেও এই বৈঠকটি খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাসূত্রগুলি। আলোচনাও গঠনমূলক হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এই বৈঠকে ভারতের তরফে ফোরটিন কোরের লেফটেনান্ট জেনারেল হারিন্দার সিং ছিলেন আর চীনের দিক থেকে ছিলেন তিব্বত সামরিক জেলার কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন।

বৈঠকে ভারত আবারও বলেছে, গালওয়ান উপত্যকায় চীন পূর্ব পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল।

সেনা সূত্র থেকে বলা হয়েছে, এটা নিয়ে যেমন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, তেমনই ভারতের প্রস্তাব মতো দুই দেশের সেনা সংখ্যা কমানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু দশক ধরেই পরস্পরবিরোধী দাবি আছে।

সীমান্ত নিয়ে চীন ও ভারতের বিরোধ দীর্ঘ যুগের। লাদাখ ও উত্তর পূর্বের অরুণাচল প্রদেশে নিয়ন্ত্রণ রেখা যে খুবই অস্পষ্ট, সেটা সামরিক এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বারে বারেই বলেছেন।

তাই দু দেশের এই মতবিরোধ সেনাবাহিনীর কমান্ডার পর্যায়ে সমাধান হবে না বলেই মনে হয়। শীর্ষ রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র: বিবিসি বাংলা