লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না: ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রী
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ২:৫৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে ছাত্রলীগকে পথ চলার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে আদর্শ নিয়ে নিজেকে গড়তে হবে। লোভ-লালসা ঊর্ধ্বে উঠে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ ছাত্র লীগকে গড়ে তুলেছেন, সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করে যেতে হবে। মনে রাখবে, লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ গড়তে তোমাদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। সেভাবেই তোমাদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এমন কথা বলেন তিনি। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এর সঞ্চালনায় সাবেক ও বর্তমান নেতারা এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রগামী ছিল ছাত্রলীগ। এদেশের প্রতিটি অর্জনে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখে আসছে। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগকে সঙ্গে নিয়েই বঙ্গবন্ধু পথ চলতেন। এমনকি ৬৬ সালের ৬ দফা মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে গড়ে তুলেছে ছাত্রলীগ। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর যখন যে কাজ করেছেন ছাত্রলীগের সঙ্গে নিয়েই করেছেন। ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ সর্বক্ষেত্রে। শহীদের তালিকা দেখলেও সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংখ্যাই বেশি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশপ্রেম ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ না থাকলে শুধু ক্ষমতাকেই উপভোগ করা যায়। নিজেদের ভাগ্যের উন্নতি করা যায়। দেশের জন্য দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কিছু করা যায় না। আওয়ামী লীগ সভাপতি ছাত্রলীগকে শিক্ষা শান্তি ও প্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সে সঙ্গে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে এখন থেকে ছাত্রলীগকে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাওয়ারও পরামর্শ দেন।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের একটা সিদ্ধান্ত থেকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল হয়েছে। বিশ্বের মানুষ এখন বাংলাদেশকে সমীহ করে। সেটা হচ্ছে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা। আমরা যখন পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিলাম, তখন দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করা বন্ধ করল দুর্নীতির অভিযোগ এনে। তারা মনে করলো আমরা আর পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবোনা। কিন্তু আমি তাদেরকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছি আমাদেরকে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে। তারা সেটা দিতে পারেনি। তখন আমরা নিজেদের অর্থায়নে সেতু করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আজকে সেই চ্যালেঞ্জ আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। পরবর্তীতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক অর্থায়ন করতে চেয়েছে, আমরা তাদের সহযোগিতা আর নেই নি। আমরা যে পারি, সেটা করে দেখিয়েছি। প্রমাণিত হয়েছে। একটি সিদ্ধান্তের কারণে এখন আমাদেরকে সমীহ করে। কারণ একটাই আমরা এ দেশের জন্য এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।
তিনি আরও বলেন, চক্রান্ত ষড়যন্ত্র এটা হবেই। আমি সেটা মাথায় রাখি না। বিভ্রান্তও হইনা হবো না। হ্যাঁ কিছু লোক থাকে, ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে, করবেই। কারণ তাদের লক্ষ্য থাকে একটা পতাকা পাবে একটা গাড়ি পেতে হবে। ক্ষমতাকে থেকে উপভোগ করবে। কিন্তু আমরা সেটা চাইনা। আমরা দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আর সিদ্ধান্তটাই আমাদেরকে সবচেয়ে বড় শক্তি দেয়। ছাত্রলীগের এর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে মাস্ক পড়ার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।