শুধু জেএমবি নয়, সন্দেহের তীর শিবিরের দিকেও: পুলিশ
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৬, ২০১৬ , ২:৩০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
চট্টগ্রাম: পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতু আক্তারকে খুনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মোজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) পাশাপাশি ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররাও জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত শুলকবহর এলাকা থেকে মোটর সাইকেলটি উদ্ধারের পর এবং বাবুল আক্তারের অতীতের জঙ্গি ও নাশকতাবিরোধী অভিযান বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে এ সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
সিএমপি কমিশনার মো.ইকবাল বাহার সোমবার সকালে বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে যে তথ্য আছে দুর্বৃত্তরা খুনের পর গোলপাহাড় মোড় দিয়ে কাতালগঞ্জ হয়ে শুলকহর দিয়ে ঢুকে বাদুরতলা দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এই পুরো এলাকাটা জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত। এজন্য এ ঘটনার সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে সন্দেহ করছি। না হলে দুর্বৃত্তরা ওই এলাকা দিয়ে পালিয়ে যাবার সাহস পেল কেন ?
‘আমরা দেখে আসছি শিবিরের যারা প্রাক্তন নেতাকর্মী তারাই কিন্তু জেএমবি গড়ে তুলেছে। যারা জেএমবি করে তাদের একটি বড় অংশই বর্তমান কিংবা প্রাক্তন শিবির। এ কারণেই হত্যাকাণ্ডে জেএমবির সঙ্গে শিবিরও জড়িত ছিল কিনা সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’ বলেন সিএমপি কমিশনার।
গত কয়েক বছরে জামায়াতের নাশকতাপূর্ণ আন্দোলনের সময় শিবিরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বাবুল আক্তার। জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়ে নাশকতা দমনেও সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এজন্য শিবিরের সন্ত্রাসীরা সংক্ষুব্ধ হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও মোটর সাইকেল উদ্ধার ছাড়া এখনও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সিএমপি কমিশনার মো.ইকবাল বাহার দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য আরও একদিন সময় চেয়েছেন।
তিনি বলেন, মোটর সাইকেল উদ্ধারের কারণে আমরা কিছু বিষয়ে ধারণা পেয়েছি। ভিডিও ফুটেজও পর্যালোচনা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি হবে বলে আশা করছি।
এদিকে সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া দৃশ্য পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। প্রতিবেদনটি ঢাকা থেকে আসা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হাতে দেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রমতে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় পুলিশ পেয়েছে মাত্র ৪৫ সেকেন্ডর মধ্যে ঘাতকরা মিতু আক্তারকে হত্যা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে। রোববার ৬টা ৩২ মিনিটে ছেলে মাহিরকে নিয়ে মিতু আক্তার বাসা থেকে বের হন। মাত্র ৪৪ সেকেন্ডে তিনি ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছে যান। ৩৩ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘাতকরা মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে গেছে।
জঙ্গি দমনে ব্যাপক সাফল্য অর্জনকারী বাবুল আক্তার সম্প্রতি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাবার পর পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত হয়েছিলেন। এজন্য তিনি চট্টগ্রাম ছেড়েছিলেন।
চট্টগ্রাম ছাড়ার একদিনের মাথায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতু আক্তারকে (৩২) রোববার (০৫ জুন) ভোরে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। প্রকাশ্য দিবালোকে একজন পুলিশ সুপারের স্ত্রী খুন হওয়ার ঘটনা নাড়া দিয়েছে সবাইকে।