শেষ হলো ইউপি নির্বাচন, প্রাণ গেল ১১৪ জনের
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৪, ২০১৬ , ৬:২৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////,জাতীয়
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: ষষ্ঠ ও শেষ ধাপে শনিবার ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো নবম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। এদিন দেশের ৪৬ জেলার ৯২ উপজেলায় ৭১০ ইউপিতে ভোট চলাকালে সহিংসতায় তিনজনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষ এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক বিরোধের জেরে সারা দেশে মোট ১১৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো।নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শনিবার শেষ ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র দখল ও প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ময়মনসিংহ, ফেনী ও নোয়াখালীতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জন।
ময়মনসিংহ : বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলার গফুরগাঁও উপজেলার সালতিয়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল নিয়ে সদস্য প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও আব্দুল করিমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পড়ে সদস্য প্রার্থী মোশারফ হোসেনের বড় ভাই শাহজাহান মিয়া (৫২) নিহত হন।
ফেনী : ফেনীর সোনাগাজীতে কেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে মো. সুমন (৩০) নামে যুবক নিহত হয়েছেন। উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চর ভৈরব হাজী তোফায়েল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শনিবার সকাল ১০টার দিকে ভোট চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
নোয়াখালী : নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরাফাত (২৩) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। শনিবার সকালে ইউনিয়নের ভেলা নগর মোহাম্মদিয়া ইবতেদিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে এ সংঘর্ষ হয়। এসময় আরাফাত গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা নেওয়ার পথে দুপুরে তিনি মারা যান।
পঞ্চম ধাপের ভোটে গত ২৮ মে শনিবার দেশের ৪৪ জেলার ৮৬ উপজেলার ৭২০ ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলাকালে নির্বাচনী সহিংসতায় ১০ নিহত হন।
এদিকে, ২৬ মে রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুজন জানায়, ইউপি নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ পর্যন্ত ১০১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহতের সংখ্যা অন্তত আট হাজার। প্রাণহানির ক্ষেত্রে অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং তা চলছে দীর্ঘমেয়াদিভাবে।
একটি জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে সুজন আরো জানায়, অতীতের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলোর প্রাণহানির তথ্য অনুসন্ধান করে দেখা যায় যে, ১৯৭৩, ১৯৭৭, ১৯৮৩ ও ১৯৯২-এ প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ১৯৮৮ সালে ৮০ জন, ১৯৯৭ সালে ৩১ জন, ২০০৩ সালে ২৩ জন এবং ২০১১ সালে ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
অতীতের নির্বাচনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ১৯৮৮ সালে। এ কারণে ওই সালের ইউপি নির্বাচনকে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচন আখ্যায়িত করা হয় বলেও জানায় সুজন।