আজকের দিন তারিখ ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্পোর্টস, স্পোর্টস লীড সাইকেল চোর পেটাতে চেয়ে বক্সিং রিংয়ে

সাইকেল চোর পেটাতে চেয়ে বক্সিং রিংয়ে


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৪, ২০১৬ , ৪:৪০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস,স্পোর্টস লীড


m.aliঅনলাইন স্পোর্টস ডেস্ক: গত শতাব্দীর সেরা একশ’ ক্রিড়া ব্যক্তিত্বের একজন মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। ক্রিড়া জগতে তার নামটি ক্ষিপ্রতার প্রতীক।

শুক্রবার পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন তিনি। ৭৪ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার ফোনিক্স এরিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি এ মুষ্টিযোদ্ধা।

তবে যে খেলার জন্য তিনি পেয়েছিলেন জগতজোড়া খ্যতি, সেই মুষ্টিযুদ্ধে তার আগমনের গল্পটি কিন্তু বেশ মজার।

১৯৫৪ সালের একদিন ১২ বছর বয়সী বালক আলীর সাইকেল চুরি হয়ে যায়।

এনিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে যান আলী। পুলিশ অফিসার মার্টিনকে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে আলী বলেন, ‘চোরকে ধরতে পারলে পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে ফেলবেন’।

মার্টিন পুলিশ হলেও কেনটাকি রাজ্যের লুইভিল শহরের বক্সিং কোচও ছিলেন। তাই বালক আলীর ভবিষ্যতটা দেখতে ভুল করেননি তিনি। ‘চোর পেটানোর আগে শিখে আসো কিভাবে লড়তে হয়’- এমন খোঁচা মেরে আলীকে তাতিয়ে দেন তিনি।

বালক আলী আর আগপিছ কিছু ভাবলেন না। পরদিন সকালেই মার্টিনের দরবারে হাজির। বক্সিং শিখতে চান তিনি। মার্টিনও তাকে বঞ্চিত করেননি।

ওস্তাদ হিসেবে শিষ্যকে শেখান ‘প্রজাপতির মতো নেচে নেচে মৌমাছির মত হুল ফুটানো’র সবচেয়ে কার্যকর কৌশলটি।

এভাবেই মুষ্টিযুদ্ধের রিংয়ে এ প্রবেশ করেন আলী। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার আলীর বিশেষত্ব ছিল- তিনি খেলার সময়ে সবার মত হাত মুখের সামনে রাখতেন না, শরীরের পাশে রাখতেন। প্রতিপক্ষের মার ঠেকানোর জন্য তিনি নির্ভর করতেন সহজাত প্রবৃত্তির উপর।

১৯৬০ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে রোম অলিম্পিকে লাইট-হেভিওয়েটে সোনা জিতে খ্যাতির তালিকায় উঠে আসেন আলী।

১৯৬০-১৯৬৩ সাল পর্যন্ত তিনি টানা ১৯টি লড়াই জেতেন যার মধ্যে ১৫টি ছিল নকআউট।

১৯৬৩ সালে তিনি ডগ জোন্স এর সাথে ১০ বাউটের এক বিতর্কিত লড়াইয়ে জেতেন।

এরপর ১৯৬৪ সালে ২২ বছর বয়সে তখনকার বিখ্যাত মুষ্টিযোদ্ধা সনি লিস্টনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেন তিনি।

এরপর বাকিটা ইতিহাস। তিনিই প্রথম মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন। এখন পর্যন্ত তার এ রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি।

১৯৮১ সালে পেশাদার বক্সিং থেকে অবসর নেয়ার আগ পর্যন্ত ৬১টি লড়াইয়ের মধ্যে ৫৬টিতে জেতেন আলী।

নিজের পারফরমেন্সের উপর প্রখর আত্মবিশ্বাসী আলী নিজেকে বলতেন ‘গ্রেটেস্ট’ অর্থাৎ সবার চেয়ে সেরা।

অবসরে যাওয়ার তিন বছর পর ১৯৮৪ সালে আলী পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হন। এরপর আমৃত্যু ৩২ বছর এ রোগে ভুগছিলেন তিনি। অসুস্থতার কারণে তিনি তেমন একটা জনসমক্ষে আসতেন না। গত এপ্রিলে পারকিনসন্স সেন্টারের সহায়তার জন্য অ্যারিজোনায় আয়োজন করা ‘সেলেব্রিটি ফাইট নাইটে’ সর্বশেষ জনসমক্ষে আসেন।

মৃত্যুর আগের কয়েকটি বছর আলীর শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়। ২০১৪ সালে নিউমোনিয়া ধরা পরে। গত বছর মুত্রাশয়ের সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্টে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আর জীবিত ফিরতে পারলেন না তিনি।