সামাজিক অবক্ষয় রুখতে সোচ্চার নারী ক্রীড়াবিদরা
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৮, ২০২০ , ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস
দিনের শেষে প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ এক অদৃশ্য অণু জীবাণু, গোটা বিশ্ব লড়ছে যার বিরুদ্ধে। ধর্ষণ দৃশ্যমান অপরাধ, ভয়াবহ ব্যাধিরূপে দেশে যার প্রাদুর্ভাব সাম্প্রতিককালে। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে শুরু করে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ কিংবা আশুলিয়া- সবখানে এই কুৎসিত অপরাধ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, ঘরে-বাইরে নারী আজ কতটা অনিরাপদ। মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকদের মতো দেশের নারী ক্রীড়াবিদরাও এই ঘৃণ্যতম সামাজিক অপরাধ নিয়ে চুপ থাকতে পারেননি। নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে উচ্চকিত কণ্ঠে তারাও প্রতিবাদমুখর। এখানে তাদের কথা তুলে ধরা হলো-
মাশরাফি মুর্তজা থেকে শুরু করে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমরাও নারী নির্যাতন রুখতে সোচ্চার হয়েছেন। নিপীড়কদের কঠিন শাস্তি তাদের কাম্য। পুরুষ ক্রিকেটারদের মতো নারী ক্রিকেটাররাও এই সামাজিক অবক্ষয় রুখতে আওয়াজ তুলেছেন।
জাহানারা আলম : অপরাধীকে কঠিন শাস্তি দেয়া এবং সচেতনতা গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ রোধ করা সম্ভব। সব সমাজেই এই অপরাধীদের বিচরণ। এটা যে শুধু ভ্যান-রিকশাওয়ালারা করছে, তা নয়। সুশীল সমাজেও একই অবস্থা। এতে বোঝা যায়, সামাজিক অবক্ষয় বেড়ে গেছে। যে কোনো বয়সের মেয়ে বাইরে গেলেই সবার চিন্তা হয়। দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হতে পরে নারী নির্যাতন রোধ করার মহৌষধ।
রুমানা আহমেদ : নারী-শিশু নির্যাতন বেড়েই চলেছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ধিক্কার জানাই নির্যাতনকারীদের প্রতি। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আশা করছি যারা এসব বর্বরোচিত কাজ করছে তাদের সবারই কঠিন শাস্তি হবে।
শারমিন আক্তার সুপ্তা : সমাজের চোখে যারা অপরাধী তাদের সবার যথাযথ শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার নারী বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হন। কিন্তু তার অধিকাংশই প্রকাশ পায় না। সম্প্রতি নারী নির্যাতন বেড়েছে। নারীকে সব সময় অবলা মনে করে আমাদের সমাজ। এটা বন্ধ করতে হবে। শিশু থেকে বৃদ্ধা- সবাই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
আমি বাইরে গেলে আমার মা চিন্তা করেন আর মা বাইরে গেলে আমি চিন্তায় থাকি। এটা কখনই কাম্য হতে পারে না। ধর্ষক ও অপরাধীদের এমন শাস্তি দেয়া উচিত যেন অন্যরা দেখে ভয়ে থাকে। আমাদের দেশেও আইন আছে। সেই আইন আরও শক্ত করা উচিত। ধর্ম শিক্ষা, পারিবারিক শিক্ষা, ছেলেমেয়েদের যৌন শিক্ষা দিয়ে বড় করতে হবে। তাহলেই সচেতনতা বাড়বে।
সাথিরা জাকির জেসি : সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রতিবাদে শামিল হতে হবে সবাইকে একসঙ্গে। অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললেই তা কমে যাবে।
মারিয়া মান্দা, জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য : ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। এটি বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। নইলে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দেবে। যারা এমন ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের অনুকরণীয় শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে এমন কাজ করতে আর কেউ সাহস না পায়।
শিরিন আক্তার, দ্রুততম মানবী : অপরাধ অপরাধই। ধর্ষণ আরও বড় অপরাধ। যে কোনো অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। ধর্ষকদের আরও বড় শাস্তি হওয়া দরকার। যে শাস্তি সবার কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে, সেটাই দেয়া উচিত তাদের।
ফাতেমা মুজিব, সোনাজয়ী ফেন্সার : নারীদের প্রতি ভয়াবহ সহিংস ঘটনাটা ঘটছে। অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। যারা ধর্ষণ করছে, তাদেরকে সেখানেই মেরে ফেলা দরকার। আদালত পর্যন্ত গড়ালে তারা জামিন পেয়ে রেরিয়ে আসতে পারে। তাই শাস্তিটা কঠোর হওয়া উচিত।
ইতি খাতুন, সোনাজয়ী আরচার : আমি বুঝে পাই না, নারীর প্রতি এই সহিংস আচরণ কেন। সবাই মিলে যদি একত্র হয়ে ধর্ষকদের গণপিটুনি দেয়, তাহলে হয়তো অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে আর কেউ এমন খারাপ কাজ করার দুঃসাহস করবে না।
মারজান আক্তার প্রিয়া, সোনাজয়ী কারাতেকা : আমার মনে হয়, পারিবারিক শিক্ষার অভাবে এমন ঘটনা ঘটছে। কারণ পরিবার থেকে মেয়েদের শালীনতা বজায় রাখার শিক্ষা দেয়া হয়। সংযত হতে বলা হয়। তাহলে ছেলেদের কেন নয়? যদি ছেলেদেরও তাদের পরিবার থেকে সংযত হওয়ার শিক্ষা দেয়া হত, তাহলে এমনটা হত না। ধর্ষকদের এমন শাস্তি দেয়া উচিত, যাতে অন্য কেউ এই চিন্তা না করে। ছেলেরা ছাড়া পেয়ে আবার একই কাজ করছে। আর ধর্ষণের শিকার মেয়ে জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে থাকে। তাই আমি মনে করি, পরিবার থেকেই ছেলেদের সংযত থাকার শিক্ষা দেয়া উচিত।