আজকের দিন তারিখ ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// সারাদেশে কেমন চলছে কঠোর লকডাউন

সারাদেশে কেমন চলছে কঠোর লকডাউন


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ১, ২০২১ , ১২:৪০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক : সারা দেশে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে কেমন চলছে। এ ব্যপারে দিনের শেষে প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যচিত্র ও খবরা-খবর তুলে ধরা হলো-
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
দিনের শেষে প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলা শহরগুলোতে জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কেবল অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করছে। রাস্তায় মানুষের চলাচল সীমিত রয়েছে।
ময়মনসিংহ : জেলায় কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মহানগরীসহ জেলার ১৩ উপজেলায় ৫ প্লাটুন সেনাবাহিনী ও ৩ প্লাটুন বিজিবি মাঠে নেমেছে। লকডাউন সফল করতে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকেই সেনাবাহিনী ও বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও আর্মড পুলিশের টহল জোরদার করা হয়।
সেনাবাহিনী ও বিজিবি মাঠে নামার বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক জানান, লকডাউন সফল করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলার ১৩ উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫ প্লাটুন সেনাবাহিনী ও ৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য কাজ করছেন। এছাড়া পুলিশ, আনসার ও আর্মড পুলিশও মাঠে আছে।
এদিকে সকাল থেকেই সড়কে গণপরিবহণ বন্ধ আছে। পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে কিছু কিছু রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাও চলাচল করতে দেখা গেছে। মহানগরীতে দোকানপাট ও কাঁচাবাজার বন্ধ দেখা গেছে। মানুষের চলাচল ছিল খুবই সীমিত।
খুলনা: সরকার ঘোষিত সাতদিনের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে খুলনায় সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। মহানগরী ও জেলার সর্বত্র পুলিশ শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সড়কের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। সকালে রাস্তা-ঘাট ফাঁকা দেখা গেছে। তবে গল্লামারী বাজারসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচা বাজারে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লোকসমাগম হতে শুরু হয়। এদিকে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা। সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছান তারা। এরপর তারা টিম হয়ে শহর ও তৃণমূলে ছড়িয়ে টহল জোরদার করেন। খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে খুলনায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এক ব্যাটালিয়ান সেনা সদস্য আমার কার্যালয়ে এসে পৌঁছান। এরপর আলোচনা করে ১০টি টিম নগরী এবং ৯ উপজেলায় টহলের জন্য যায়। প্রতিটি সেনা টিমের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে গল্লামারী বাজারে আসা আবু হোসেন বলেন, মোহাম্মদনগর থেকে বাজার করতে এসেছি। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে আজকের পরিবেশ ভিন্ন। এ বাজার ভোর থেকেই জানকীর্ণ হয়ে থাকে। কিম্তু আজ বাজারে দোকানপাট বেশি খোলেনি। মানুষজনও অনেক কম। এবার আসলেই লকডাউন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ভ্যানে সবজি বিক্রেতা সোবহান শেখ বলেন, গত রাতে পাইকারি বাজার থেকে কেনাকাটা করে সব গুছিয়ে রাখি। আর সকাল ৭টার দিকে এ বাজারে আসি। অন্য দিনগুলোতে ভোর ৫টায় এ বাজারে চলে আসি। তখন ভ্যান নিয়ে ব্রিজ পার হতে পারি না। মানুষের ভিড় থাকে অনেক। আজ সকাল ৭টায় এখানে এসে দেড় ঘণ্টা পর ক্রেতা দেখা গেছে। এরপরই বাজারে লোকসমাগম বাড়তে শুরু করে। বেচা বিক্রিও হয়। খুলনার পুলিশ সুপার মো মাহবুব হাসান বলেন, জেলার ৯টি উপজেলায় পুলিশ শক্ত অবস্থানে আছে। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজশাহী: রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নাটোর কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট থেকে সোনাবাহিনী এসে রাজশাহীতে লকডাউনে দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। এছাড়া সকাল থেকে রাজশাহীতে বিজিবিও দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দফতর থেকে ছয়জন অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন রয়েছেন। আগের বিশেষ লকডাউনে নগরীতে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে ছিলেন। তারাও মাঠে রয়েছেন। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। রাস্তায় মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সিলেট: কঠোর লকডাউনে সিলেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সড়কে তৎপর রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকে সিলেট নগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের তৎপরতা দেখা গেলেও সেনাবাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়েনি। তবে সিলেটের সকাল থেকেই ফাঁকা ছিল। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সড়কে নেই কোনও গণপরিবহন। চলাচল করছে কিছু রিকশা ও মোটরসাইকেল। পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে হেঁটে অনেককে অফিসে যেতে দেখা গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, বিনা কারণে কেউ ঘর থেকে বের হলে এবং বিধিনিষেধ অমান্য করলে কঠোর আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে। এবার রিকশা ব্যবহার করা গেলেও কোনও ইঞ্জিনচালিত যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। তা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া মাঠে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। সরকার জরুরি সেবা বলতে যা বুঝিয়েছে এর বাইরে কোনও যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ জরুরি সেবার প্রয়োজন হলে সেগুলো নিতে পারবেন বলে জানান তিনি। সিলেট মহানগরীর ছয় থানা ও পুলিশ ফাঁড়িকে ইতোমধ্যে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে লকডাউনে কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবীরা। সিলেটের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাজমিন বেগম বলেন, লকডাউনে রিকশা না পেয়ে হেঁটে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। আসার পথে নগরীর শিবগঞ্জ এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টে জিজ্ঞসাবাদের মুখোমুখি হন বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম: বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে চট্টগ্রামের রাস্তাঘাট মানুষের আনাগোনা কমেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সড়কে গার্মেন্ট কর্মী আর জরুরি সেবা সংস্থার কাজের সঙ্গে জড়িত ছাড়া অন্যদের খুব একটা দেখা যায়নি।
কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে সকাল ৬টা থেকে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ যথাযথভাবে পালন করতে নগরীর সাতটি প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। এছাড়া সকাল ১০টা থেকে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসনের ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের ১২টি টিম।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১২ পৃথক টিম সার্কিট হাউস থেকে একযোগে সকাল সাড়ে ১০টায় অভিযান শুরু করেছেন। তিনি জানান, বাকলিয়া-চকবাজার এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা জান্নাত, খুলশী এলাকায় ইনামুল হাসান, কোতোয়ালি এলাকায় মো. উমর ফারুক, বায়েজিদ এলাকায় জিল্লুর রহমান, পাঁচলাইশ-চান্দগাঁও এলাকায় রেজওয়ানা আফরিন, হালিশহর এলাকায় মাসুদ রানা, বন্দর-ডবলমুরিং এলাকায় নূরজাহান আকতার সাথী, আকবরশাহ-পাহাড়তলী এলাকায় ফাহমিদা আফরোজ ও বায়েজিদ এলাকায় প্লাবন কুমার বিশ্বাস দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে লকডাউনে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকরা। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যাত্রীবাহী বাস রিজার্ভ করে স্টাফদের কারখানায় যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তবে যে সব প্রতিষ্ঠান এই ব্যবস্থা করেনি তাদের স্টাফরাই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
কাজির দেউরি এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী সার্জেন্ট তৌফিকুল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোনও যানবাহন এখনও চলাচল করছে না। যেসব যানবাহন ভোগ্যপণ্য, জরুরি সেবা সংস্থার সঙ্গে জড়িত ওইসব গাড়ি চলাচল করছে। রাস্তায় লোকজনও খুব কম। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ গাড়ি বের করলে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
নারায়ণগঞ্জ: সরকারের কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ নারায়ণগঞ্জ শহরে ব্যাপক তৎপর রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সড়ক-মহাসড়কে কোনও গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষেশ কারণে বা জরুরী প্রয়োজনে কেউ রাস্তায় বের হলেই পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরার মুখে। রাস্তার বের হওয়ার যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে ছেড়ে দেওয়া হয়, অন্যথায় আটকে দেওয়া হচ্ছে তাদের।
জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসনের ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্ব নগরীর বিভিন্ন স্পটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। লকডাউন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে জেলা পুলিশ ৩০টি চেকপোস্ট বসিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, লকডাউন বাস্তবায়ন করতে সকাল থেকে জেলা পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। নারায়নগঞ্জ শহরসহ জেলায় প্রবেশ ও বের হওয়ার প্রতিটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যাতে কোনোভাবেই বিনা কারণে কেউ রাস্তায় বের হয়ে ঘুরাঘুরি করতে না পারে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে হাইওয়ে পুলিশ ছয়টি চেকপোস্ট বসিয়েছে। যাতে কোনও ইঞ্জিনচালিত যানবাহন প্রবেশ বা বের হতে না পারে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, সকাল থেকেই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। লকডাউন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে ও সেনা সদস্যরাও মাঠে থাকবেন বলে জানান তিনি।
গাজীপুর: লকডাউনে গাজীপুর সদর এলাকা অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। সকাল থেকেই পুলিশ সদস্যরা লাঠিসোটা নিয়ে বিভিন্ন দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া কোনও গণপরিবহন সড়কে দেখা যায়নি। তবে ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখা গেছে উপজেলা শহরের দিকে চলাচল করেছে। ইঞ্জিনচালিত ওইসব রিকশাগুলোকেও পুলিশ ধাওয়া করেছে। শহরে নিত্যপণ্য ও কাঁচাবাজর ছাড়া অন্যসব দোকানিপাট বন্ধ ছিল। এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেকে পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে পৌঁছেছে। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মীদের আনা-নেওয়া করতে পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে।
মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর একটা অংশ মুন্সীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করছে। সকাল থেকে সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। এদিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌপথে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মানিকগঞ্জের আরিচা ও রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ফেরিঘাট ফাঁকা রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর থেকে দুটি ঘাটেই ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ থাকলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘাটগুলো ফাঁকা রয়েছে।
যশোর: বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যশোরে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে এবং আন্তজেলা বাস, ট্রেন ও গণপরিবহনসহ সিএনজি, রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ আছে। যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার ও র‌্যাব সদস্যরা সড়কেদায়িত্ব পালন করছেন।
কুড়িগ্রাম: জেলায় বৃহস্প‌তিবার সকাল থে‌কে সেনা টহল শুরু হয়। লকডাউন চলাকা‌লে রংপুর থে‌কে সেনা সদস্যের দল প্রতি‌দিন কু‌ড়িগ্রা‌মে এ‌সে টহল ও অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নে‌বেন। পাশাপা‌শি বি‌জি‌বিও মোতা‌য়েন থাক‌বে। জেলা প্রশাসন থে‌কে নির্বাহী মে‌জি‌স্ট্রেট প্রস্তুত রাখা হ‌য়ে‌ছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল ক‌রিম এসব তথ্য নশ্চিত করেছেন।
নোয়াখালী: জেলায় কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। লকডাউন মনিটরিংয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পাঁচটি মোবাইল টিম গঠন করা হয়েছে। মোবাইল টিমগুলো জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সেনাবাহিনীর চারটি পেট্রল টিম টহল দিবে। আজকে একটি সদর এলাকায় অপরটি বেগমগঞ্জ এলাকায় টহল দিবে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাবের দুটি টিম সকাল ৮ থেকে রাত ৮ পর্যন্ত টহল দিবে। একটি সদর এলাকায় অপরটি কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় টহল দিবে।
অন্যদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চল গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে, বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাস্তায় থাকবে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাবও। অপ্রয়োজনে কেউ রাস্তায় বের হলে জেল-জরিমানা করা হবে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। রেল ও নৌপথে গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল, শপিংমল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট, সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে লকডাউন বাস্তবায়নে ১০৬ কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন ৫৫ কর্মকর্তা। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ১২, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ছয়, রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে দুই, সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে দুই, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ৯, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে পাঁচ এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ১৫ জন কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।