সিলেটে ভ্যাট কর্মকর্তাদের নৈরাজ্যে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৯, ২০১৬ , ৩:৪৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
সিলেট : মাঠ পর্যায়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা ভ্যাট সংগ্রহের নামে অহেতুক হয়রানি করেন বলে অভিযোগ করেছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পরিদর্শনের নামে কর কর্মকর্তারা যখন-তখন যে কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছেন। নিরীক্ষার নামে জোর করে জব্দ করছেন নথিপত্র। এসব কর্মকর্তার জোর-জবরদস্তি থেকে ব্যক্তি করদাতাও রেহাই পাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে উল্টো সিলেটের ব্যবসায়ীদের চোর বলে গালিও দিচ্ছেন কর কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রি’র পরিচালকরা সিলেটের ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে একটি যৌথ সভার আয়োজন করেন। ওই সভা চলাকালে এক ব্যবসায়ী নেতার ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করেন সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনের যুগ্ম কমিশনার নেয়ামুল ইসলাম।
ওই কর কমর্কতা আরো বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠান তো সিলেটের নয়, তারপরও কেন তার প্রতি আপনারা দরদ দেখান।’
কর কর্মকর্তার এমন বক্তব্যের পর সিলেটের ব্যসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলামেইলকে বলেন, ‘দেশে এখন গণতান্ত্রিক সরকার। কিন্তু রাজস্ব কর্মকর্তারা ওয়ান-ইলেভেনের মতো
আচরণ করছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এদের (রাজস্ব কর্মকর্তাদের) ব্যবহার চোর-পুলিশের মতো। এসব কর্মকর্তার জব্দ করা নথিপত্র উদ্ধার করতে গিয়ে করদাতাদের রাজস্ব অফিসে ধর্না দিতে হচ্ছে।
সর্বশেষ গত বুধবার সকালে সিলেটের মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেলে অভিযান চালায় সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনের কর্মকর্তারা।
সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনের যুগ্ম কমিশনার নেয়ামুল ইসলামের নেতৃত্বে চলা ওই অভিযানের সময় ওই হোটেল থেকে সব ধরনের নথিপত্র ও একটি কম্পিউটার জব্ধ করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেয়ামুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে সিলেট মেট্রো ইন্টারন্যাল হোটেলের নথিপত্র জব্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এখন কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি বুঝতে হলে অফিসে আসবেন।’
ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে নেয়ামুল ইসলাম বলেন, ‘এটা মিথ্যা।’ তিনি নিজেকে সৎ অফিসার দাবি করে বলেন, ‘ভালো করতে গেলেই কিছুটা ঝামেলা হয়।’
এদিকে সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনের কর্মকর্তাদের এমন আচরণে ব্যবসয়ীরা নেতারা বলছেন, মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ী এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপরই বারবার এনবিআর এ ধরনের খড়গ চাপিয়ে দিচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে কর দিলেই বিপদ। আর নিবন্ধনের বাইরে থাকলেই তারা নিরাপদ।
সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসিন আহমদ বলেন, ‘নিয়মিত যারা কর আদায় করে তাদের উপর প্রতি বছর দ্বিগুন হারে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়াও নতুন কোনো করদাতা সংগ্রহ হচ্ছে না। এতে অনেক ব্যবসায়ী কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমারা চাই সবার কাছ থেকে কর আদায় করা হোক। কিন্তু কর কর্মকর্তারা আমাদের কাছে আসেনা। আসলে কর আদায়ে আমরাও সহযোগিতা করব।’
তবে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করে রাজি হননি।
তবে সিলেটে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মো. খন্দখার শিপার আহমদ কর কর্মকর্তাদের হয়রানির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘কর কর্মকর্তারা ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই কর আদায়ের চেষ্টা করে। এতে ব্যবসায়ীদের বিপাকে পড়তে হয়।’