আজকের দিন তারিখ ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না মানুষ : জীবন রক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি পোষানো চ্যালেঞ্জ

স্বাস্থ্যবিধি মানছে না মানুষ : জীবন রক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি পোষানো চ্যালেঞ্জ


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ১২, ২০২০ , ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে চলার মধ্যেই ঘোষিত লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব নির্দেশনা ভেঙে পড়ছে। রাজধানীবাসীও ঘরে থাকা মানছে না। অন্যদিকে ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে হেঁটে অগণিত মানুষ যেমন আসছে তেমনি রয়েছে যানবাহনের চাপ। গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জ চেকপোস্টগুলোতে অনেকটা ঢিমেতালে দায়িত্বপালন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমতাবস্থায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ বিপর্যয় নামতে পারে। পোশাক কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট, শপিংমল চালু রাখার কারণে সড়কে মানুষের চলাচল বেড়ে গেছে। শেষ সময়ে এসে এমন সিদ্ধান্ত কেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী গত ১০ মে থেকে দোকানপাট খুলতে আর কোনো বাধা নেই। কিন্তু রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি বড় শহরের ব্যবসায়ীদের কিছু অংশ এখনো দোকানপাট, বিপণি বিতান ইত্যাদি না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা মনে করি, সিদ্ধান্তটি ব্যবসায়ীদের সুবিবেচনাপ্রসূত। অনেক আগে শুরু হওয়া ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতেও সংক্রমণের হার এখন কিছুটা স্তিমিত হয়ে এলেও অধিকাংশ দেশে লকডাউন, শাটডাউন প্রত্যাহার করা হয়নি। কোনো কোনো দেশে অতি সীমিত আকারে কিছু কিছু সেক্টর খুলে দিলেও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পুনরায় পুরোপুরি চালুর ব্যাপারে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে দেখা যাচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সত্তে¡ও পোশাক কারখানা, দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এটা কতটা যুক্তিযত সেটা ভাবার বিষয়। আমাদের দেশের আক্রান্তের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৬৯১। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯০২ এবং মারা গেছেন ২৩৯ জন। এভাবে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রæত বাড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, সামাজিক দূরত্ব না মানা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার সামাজিক দূরত্বের বিষয়টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। অথচ আমরা কী করছি? কী করে গার্মেন্ট মালিকরা এটা চিন্তা করলেন, শত শত কর্মী পাশাপাশি বসে একসঙ্গে কাজ করবে? বাংলাদেশে করোনা মহামারি ইউরোপ-আমেরিকার মতো ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণঘাতী রূপ নিলে দেশের সামাজিক বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে আতঙ্কিত হতে হয়। আমরা বলব এক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা ও পদক্ষেপ থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে আরো সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ভাইরাস মোকাবেলায় কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞান অসহায়ের মতো লক্ষ করছে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু। এ মৃত্যুর মিছিল কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা আমরা এ মুহূর্তে বলতে পারব না। জীবন রক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় রাখাÑ এই উভয় ক‚ল রক্ষার চ্যালেঞ্জে সবাইকে বিচক্ষণতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।