আজকের দিন তারিখ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় হলি আর্টিজান হামলার চার বছর : বিচারকাজ দ্রুত নিষ্পন্ন হোক

হলি আর্টিজান হামলার চার বছর : বিচারকাজ দ্রুত নিষ্পন্ন হোক


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২, ২০২০ , ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার চার বছর পূর্ণ হলো গতকাল। দেশি-বিদেশিসহ মোট ২২ জনকে হলি আর্টিজানে জঙ্গিরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। সেই বিভীষিকাময় ঘটনার কথা মনে হলে নিহতের স্বজনরা আঁতকে ওঠেন। তারা দাবি করে আসছেন, বিচারকাজ যেন দ্রুত শেষ হয়। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। পরের বছর নভেম্বরের মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষ হয়। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই মামলার রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনের ফাঁসির আদেশ দেন। তবে আদালতের রায় এখনো কার্যকর হয়নি। করোনা ভাইরাস মহামারিতে আটকে গেছে ডেথ রেফারেন্সের পেপারবুক। পেপারবুক তৈরি হলে হাইকোর্ট মামলার আপিল শুনানি কার্যক্রম শুরু হবে। আমরা আশা করছি দ্রুত এ মামলার কার্যক্রম শেষ হবে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করে ২০ বিদেশি নাগরিকসহ ৩০ থেকে ৩৫ জনকে জিম্মি করে রাখে এবং রাতভর হত্যাযজ্ঞ চালায়। পরদিন সকালে রেস্তোরাঁয় জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। অভিযান শেষে যৌথবাহিনী বিদেশি নাগরিকসহ ১৩ জনকে জীবিত এবং মোট ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। অভিযানে ছয় জঙ্গিও নিহত হয়। আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেসব দেশি-বিদেশি মানুষকে যারা জঙ্গি হামলায় চিরতরে আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছেন। আমরা তাদের স্বজনদের প্রতি জানাই সহমর্মিতা। গুলশান হামলার পরপর শোলাকিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো কয়েকটি জঙ্গি হামলা সংঘটিত হয়েছে। আরো নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাদের সেসব পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে সক্ষম হয়েছেন। করোনাকালে জঙ্গিরা বসে নেই, চলছে অনলাইনে সদস্য সংগ্রহের কাজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, এ সময়টাকে জঙ্গিরা কাজে লাগিয়েছে অনলাইনে সদস্য সংগ্রহের কাজে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও থেমে নেই। শুধু লকডাউনের মধ্যেই র‌্যাব জঙ্গি সন্দেহে ৬০ জনের বেশি গ্রেপ্তার করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। হলি আর্টিজানে হামলায় ঘটনার যারা পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভ‚মিকা রেখেছে এরকম অনেককেও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাবি। আমরা আশা করব, হলি আর্টিজানসহ সব জঙ্গি হামলার বিচার যাতে দ্রুত নিষ্পন্ন হয় তার জন্য সচেষ্ট থাকবেন সংশ্লিষ্টরা। হলি আর্টিজানের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি যাতে এ দেশে আর কোনোভাবেই ঘটতে না পারে তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় অঙ্গীকার করতে হবে আমাদের।