আজকের দিন তারিখ ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// ২০২১ সালে ৫৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা, সকালেই ঘটেছে ৩০ ভাগ

২০২১ সালে ৫৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা, সকালেই ঘটেছে ৩০ ভাগ


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ৪:৪৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক : সদ্য বিদায়ী ২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত ৭ হাজার ৪৬৮ জন। দুর্ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই ঘটেছে সকালে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরে এসব তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। শনিবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতা-কর্মীরা

বিদায়ী বছরটিতে ৭৬টি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। বলা হয়, এসব দুর্ঘটনায় ১৫৯ জন নিহত, ১৯২ জন আহত এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ঝালকাঠির সুগন্ধ্যা নদীতে ১টি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫১ জন নিহত, ২৩ জন চিকিৎসাধীন এবং অজ্ঞাত সংখ্যক নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়ার ঈদে ঘরমুখো যাত্রায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি ঘাটে তাড়াহুড়া করে নামার সময় ৬ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছে। ১২৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত এবং ৩৯ জন আহত হয়েছে।

সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

পরে লিখিত বক্তব্যে ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দরা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকাংশই হতদরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তদের ৭২-৭৫ শতাংশই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহতরা তাদের পরিবারের প্রধান বা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে এসব পরিবার আর্থিকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়ছে। একেবারে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। সামাজিক অর্থনীতির মূল স্রোত থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকার সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান বা পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। ১৯৮৩ সালের ‘মোটরযান অধ্যাদেশ অ্যাক্ট’- এ সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মোটরযানে তৃতীয় পক্ষীয় ঝুঁকি বিমা বাধ্যতামূলক ছিল, যদিও সেই ঝুঁকি বিমার মাধ্যমে কেউ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এমন ইতিহাস খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’- তে মোটরযানের তৃতীয় পক্ষীয় ঝুঁকি বিমা উঠিয়ে দিয়ে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ‘ট্রাস্ট ফান্ড’ নামে একটি তহবিলের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি সেই ‘ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠনই হয়নি। ফলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউই ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। আমরা সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ফান্ড’ চাই। একইসাথে মোটরযানে তৃতীয় পক্ষীয় ঝুঁকিবিমাও কার্যকরভাবে ফেরত চাই। সরকারের দায়িত্বহীনতার কারণে, অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষ প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহত হচ্ছে, অথচ সরকার দায় নিচ্ছে না। এটা সভ্য দেশে চলতে পারে না।

তারা আরও বলেন, দেশের সড়ক পরিবহন খাতে যে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য চলছে। তা বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে শুধু কমিটি গঠন এবং সুপারিশমালা তৈরির চক্র থেকে বেরিয়ে একটি টেকসই জনবান্ধব পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। এটা জাতীয় অগ্রগতির স্বার্থেই জরুরি। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

এসময় বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ ও রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান সিদ্দিকী, আব্দুল হামিদ শরীফ, অধ্যাপক হাসিনা বেগম, ড. আরমানা সাবিহা হক, সাইদুর রহমান প্রমুখ।