২০ বছর বয়সেই প্রতারণা করে কোটিপতি!
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ৩১, ২০২১ , ১২:৫৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: এক্সক্লুসিভ
দিনের শেষে প্রতিবেদক : চেহারায় আভিজাত্যর ছাপ। পরনে দামি ব্রান্ডের পোশাক। চলাফেরা করে দামি গাড়িতে। থাকে পাঁচতারকা হোটেলে। পরিচয় দেয় কখনো পুলিশের ডিআইজি, কখনো দুদকের পরিচালক অথবা এনএসআইয়ের পরিচালক হিসাবে। এসব পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতারণা করছিল আশরাফুল ইসলাম দিপু। মাত্র বিশ বছর বয়সী এই যুবক ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা থানার উত্তর চর কলমি এলাকার আবদুল জলিল ফরাজী ওরফে মতু ফরাজীর ছেলে।
প্রতারক আশরাফুল বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারেনি। মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেই প্রতারণা বিদ্যার সকল কৌশল আয়ত্ব করেছে। প্রতারণার শিকার হয়ে ভাটারা থানায় করা এক ভুক্তভোগীর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি)। শনিবার রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেপ্তারের পর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
ডিবি জানিয়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলের ত্রাণ আত্মসাতের মাধ্যমে প্রতারণার জগতে পা বাড়ায় আশরাফুল। নিজেকে সে নানাভাবে পরিচয় দিত। প্রতারণার জন্য সে নিজেকে পুলিশের ডিআইজি থেকে শুরু করে দুদক কমিশনার, এনএসআই পরিচালকের পরিচয় দিত। পাশাপাশি মার্কিন নাগরিক, কখনো স্বনামধন্য নোমান গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান, কখনো ইসলাম টেক্সটাইলের পরিচালক, আবার কখনো বা গুলশান ওয়েল ফেয়ার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদ ব্যবহার করতো। প্রতারনার জন্য যখন যে পরিচয় প্রয়োজন সে রুপেই আবির্ভূত হয়ে বনে গেছে কোটি টাকার মালিক। উপকূলীয় অঞ্চলের দাতা সংস্থার দেয়া ত্রাণ আত্মসাতের মাধ্যমে প্রতারণা শুরু করে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। স্কুলে নিয়োগ, এনএসআইতে চাকরি দেয়া, করোনাকালে মানুষকে সহযোগীতার নামে ‘মানবিক টিম’ নামে ফেসবুক পেজ খুলে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন প্রলোভনে যাকে যেভাবে বশে আনা সম্ভব সেটাই করতো আশরাফুল। ডিবি জানিয়েছে, নিজের ভুয়া পরিচয় প্রচারণার জন্য ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল খুলে। যেখানে নিজের ভুয়া পরিচয় প্রকাশ করে নিয়মিত লাইভ করতো। মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য ব্যবহার করতো নামিদামি গাড়ি । যাতায়াত করতো পাঁচতারকা হোটেলে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তার এসব প্রতারণা হতবাক করেছে সবাইকে। মানুষকে চাকরি দেয়ার কথা বলেই টাকা হাতিয়ে নিত। অথচ বাস্তবে কাউকে চাকরি দিতে পারতো না। চাকরিপ্রার্থীদের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে শান্তনা দিতো।
এ বিষয়ে ডিবির ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের এডিসি আশরাফউল্লাহ বলেন, যাতায়াতের জন্য ভাড়া করা গাড়ির চালকের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন আশরাফুল। পরে ওই চালক প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে গত বৃহস্পতিবার ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা (নম্বর-৬৫) দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তে নেমে আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরো তথ্য বেরিয়ে আসবে।