কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: ‘আখাউড়া থেকে লাখসাম ডুয়েল গেজ ডাবল রেল লাইন নির্মাণ ও বিদ্যমান রেল লাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর’ শীর্ষক কাজের ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ৯৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সিটিএম জেভি। এ প্রকল্পসহ ৪ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

রোবরার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রণালয়ে অন্য একটি বৈঠক থাকায় অর্থমন্ত্রী চলে গেলে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপ্ররিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘পানি ভবন নির্মাণ (১ম পর্যায়) প্রকল্পের প্রথম প্যাকেজের (৩য় তলা পর্যন্ত) প্রথম ভেরিয়েশন অর্ডার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণ করছে কুশলী নির্মাতা লিমিটেড। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৬৭ কোটি ৩ লাখ টাকা।

বিশ্বব্যাংক ও নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে ‘পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টের বিভিন্ন স্থানে মোট ১ হাজার ৯৩৪ মিটার শক্তিশালীকরণ (প্যাকেজ নং ডব্লিউ-০৪) কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে ‘আবদুল মোনেম লিমিটেড’। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৪০ লাখ ৪ হাজার টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৮০ কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর সাব-রিজিওনাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে ‘কনসালটেন্সি সার্ভিস ফর ফিজিবিলিটি স্টাডি অ্যান্ড ডিটেইলড ডিজাইন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন প্রজেক্ট’ (আরসিআইপি) সেবার প্রথম ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দিতে হবে ৩২ কোটি ৫৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য, চারটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এ পরামর্শক সেবার কাজটি করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘কানা রেল কনসালটেন্টস’, জার্মান প্রতিষ্ঠান ডিবি ইন্টারন্যাশনাল জিএমবিএইচ’, অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠান এসএমইসি ইন্টারন্যাশনাল পিটিওয়াই’ এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘এসিই কর্পোরেশন’।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বেনাপোল ও বুড়িমারি স্থল বন্দর উন্নয়নে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পে’র আওতায় বেনাপোল স্থল বন্দর উন্নয়ন (প্যাকেজ -০২)-এর একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে মনিকো-এটিসি। এতে ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় ‘কাজল-তেতুঁলিয়া নদীপথ ড্রেজিং’-এর একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৩৩ কোটি ৬৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী।

এছাড়াও বৈঠকে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসন পল্লী এলাকায় অভ্যন্তরীণ স্যানিটারি, বৈদ্যুতিক সংযোগ ও গ্যাসলাইন স্থাপনসহ ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট আয়তনের ৬ ইউনিট বিশিষ্ট ২০ তলা আবাসিক ভবন (ভবন নং-১) নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে ‘মেসার্স সাজিন এন্টারপ্রাইজ’ এবং ‘জামাল অ্যান্ড কোম্পানি’। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৯০ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।

একই প্রকল্পের আওতায় ৮৫০ বর্গফুট আয়তনের ৬ ইউনিট বিশিষ্ট ২০ তলা আবাসিক ভবন (ভবন নং-১ ও ২) নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে এমসিএল-এমএসিএল। এতে মোট ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ৫৪ হাজার টাকা।

ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জোনের জন্য দ্বিতীয় ধাপে দেড় লাখ করে মোট সাড়ে ৪ লাখ প্রিপেইড বৈদ্যুতিক মিটার ক্রয়ের তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনটি প্রস্তাবেই মিটার সরবরাহের কাজটি পেয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান হেক্সিং ইলেকট্রিক। এতে মোট ব্যয় হবে ২২০ কোটি ২২ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার কিলোমিটার কন্ডাক্টর, এসিএসআর, বেয়ার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইস্টার্ণ কেবলস লিমিটেড এসব পণ্য সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ৯২ লাখ ২৪ হাজার টাকা।’

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্পের আওতায় দুটি প্যাকেজে মোট ৫২ হাজার ৪৭৮ টি এসপিসি পোল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এর একটি প্যাকেজে ২৬ হাজার ২৩৯টি পোল সরবরাহ করবে যৌথভাবে মেসার্স ক্যাসেল কন্সট্রাকশন এবং অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান। এর জন্য ব্যয় হবে ৮৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অপর প্যাকেজে বাকি ২৬ হাজার ২৩৯টি পোল সরবরাহ করবে মেসার্স ডাডা কন্সট্রাকশন ও মেসার্স কনটাক ইঞ্জনিয়ার্স। এতে ব্যয় হবে ৮০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।