৪ দিনে পুলিশের ওপর দুই হামলা: ইন্ধনদাতাদের খোঁজে মাঠে গোয়েন্দা
পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১১, ২০২২ , ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: এক্সক্লুসিভ
দিনের শেষে ডেস্ক : রাজধানীতে মাত্র চারদিনের ব্যবধানে দুই জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। থানার ওসিসহ অন্তত পাঁচ পুলিশ সদস্য এতে আহত হয়েছেন, ভাঙচুর করা হয়েছে ট্রাফিক বক্স। এসব হামলার পেছনে ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন’ রয়েছে বলে মনে করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করতে গোয়েন্দারা এরইমধ্যে মাঠে নেমেছে বলে জানা গেছে। ডিএমপি কর্মকর্তারা বলছেন, যে কোনো বাহিনীর তুলনায় পুলিশ জনগণের কাছাকাছি থাকে। যে কারণে জঙ্গি থেকে শুরু করে স্বার্থানেষী মহল সহজেই পুলিশকে টার্গেট করে। পুলিশের ওপর হামলা করে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে ফায়দা লুটতে চায় স্বার্থান্বেষীরা। এ ধরনের হামলা ঠেকাতে আরও সতর্ক থাকা এবং দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। গত মঙ্গলবার সকালে জুরাইন পুলিশ বক্সের পাশে উল্টোপথে আসা এক যাত্রীকে থামানোকে কেন্দ্র করে পুলিশের তিন সদস্যকে মারধর ও ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর করা হয়।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে মুসল্লিদের ভেতর থেকে কয়েকজন যুবক মোহাম্মদপুর থানার ওসি ও একজন এএসআইকে মারধর করে। জুড়াইনে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত সাড়ে চারশো জনকে আসামি করে শ্যামপুর থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি। এ ঘটনায় শুক্রবার পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার ঢাকা উদ্যানে হামলার ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি বেড়েছে। ঢাকা মহানগর এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যেন কেউ কোনো আগুন সন্ত্রাস বা নাশকতা করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলার যেন অবনতি না ঘটে সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। পুলিশের ওপর পৃথক হামলার ঘটনায় স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, জুরাইনে একজন উল্টোপথে মোটরসাইকেল নিয়ে এলো। আর তার কাছে কাগজ দেখতে চাওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলা হয়। মুহূর্তে শত শত লোক জড়ো করে পুলিশ সদস্যদের মারধর ও ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর করা হলো। এটা স্পষ্ট স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে হামলা হয়েছে। আমরা এই ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। এরইমধ্যে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ঢাকা উদ্যানে মোহাম্মদপুর থানার ওসির উপর হামলার পেছনেও অশুভশক্তির ইন্ধন থাকতে পারে বলে ধারণা ডিবিপ্রধানের। পুলিশের ওপর হামলার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, একটি মহল ফায়দা লুটতে সবসময় পুলিশকে টার্গেট করে। এর আগেও দেশবাসী দেখেছে পুলিশের ওপর বোমা হামলাসহ নৃশংস হামলা হয়েছে। তবে এসব হামলায় কেউ পালিয়ে থাকতে পারেনি। অপরাধের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাতেও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। হামলার বিষয়ে ডিএমপি মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকা উদ্যানে স্থানীয়দের একটি সংগঠন থেকে বিক্ষোভ করার প্রস্তুতি নেয়। তখন ওসি সাহেব তাদের দ্রুত সময়ে কর্মসূচি শেষ করার কথা বলেন। চলে আসার সময় কয়েকজন যুবক তার ওপর হামলা করে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে এরইমধ্যে আমরা কাজ করছি। ডিএমপির অপরাধ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ সাধারণ মানুষের সবচেয়ে কাছে থাকে, তাই সহজেই পুলিশকে টার্গেট করা হয়। পুলিশকে আক্রান্ত করে একটা মহল ফায়দা নিতে চায়। এ ধরনের হামলা প্রতিহত করতে আমাদের আরও সতর্ক এবং কৌশলী হতে হবে।