আজকের দিন তারিখ ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বিনোদন ৬ বছর পর খোঁজ মিলল সেই ‘দীপান্বিতা’র

৬ বছর পর খোঁজ মিলল সেই ‘দীপান্বিতা’র


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৫, ২০২০ , ২:২৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: বিনোদন


দিনের শেষে ডেস্ক : একটিমাত্র কাজ দিয়ে হাজারো তরুণের মন কেড়েছিলো ‘দীপান্বিতা’। সদ্য প্রেমে পড়া তরুণ-তরুণী ছাড়াও অনেকের মনে এই নামটি ঠাই করে নিয়েছিলো ‘সরি দীপান্বিতা’ নাটকের মাধ্যমে। নাটকটির টাইটেল গান ‘দীপান্বিতা’ খুব অল্প সময়ে হয়ে উঠেছিলো জনপ্রিয়। তরুণ-তরুণীদের মুখে মুখে ফিরে রোমান্টিক এ গানটি। স্বরাজ দেবের কথা ও সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছিলেন শাখাওয়াত অর্ণক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছয় বন্ধুর কাহিনী নিয়ে নির্মিত এ নাটকের গল্পটি বাস্তবের কাছেও হার মেনে যায় একসময়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সহজ সরল বোকা এক মেয়ের দীপান্বিতা থেকে দাপু হওয়ার গল্প সবার মনে গেঁথে যায়। শেষাংশের অপূর্ণতাই যেন গল্পের নায়ক-নায়িকাকে দিয়েছে প্রাপ্তি আর দর্শকদেরকে দিয়েছে আশা। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে নাটকটি প্রচার করা হয়। স্বরাজ দেবের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এতে দেখা মিলেছিল কতগুলো তরুণ মুখের। গল্পের আকাশ ও দীপান্বিতা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জীবন রায় ও নাফিয়া বিনতে রায়হান তূর্ণা। ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এ গল্পের নায়ক-নায়িকারা এখনও তরুণদের মনে রয়েছেন এক অন্যরকম ভালোবাসার জায়গায়। আকাশ চরিত্রে রূপদানকারী জীবন এখন অভিনয় নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করলেও অন্যদিকে গল্পের মূল আকর্ষণ দীপান্বিতা চরিত্রে রূপদানকারিনী নাফিয়া ব্যস্ত রয়েছেন স্বামী, সংসার ও সন্তান নিয়ে। অনেক বছর ধরেই নিখোঁজ তিনি, এরপর আর কোন কাজে দেখা যায় নি তাকে। আজ মঙ্গলবার নাফিয়ার জন্মদিন। জন্মদিনে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও অনুরাগীদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা পাচ্ছেন। জন্মদিনেই তার সঙ্গে কথা হয়। একটিমাত্র নাটকেই কাজ করেছিলেন। নাটকের গানটির পাশাপাশি নাটকটিও দর্শকমহলে বেশ ভালো সাড়া পায়। গল্পের শেষাংশ দেখার পর সবাই শুধু গল্পের নায়িকা দীপান্বিতার খোঁজ জানতে চায়। এরপর আপনাকে আর কাজে দেখা যায় নি কেন? এমন প্রশ্নে নাফিয়া বলেন, আমি আসলে অভিনেত্রী নই, ( সরি দীপান্বিতা) এটা আমার প্রথম কাজ ছিল। তখন অনেক কিছুই বুঝতাম না, কিভাবে কি করতে হয়! এই কাজটি করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি, অনেক বকাও খেয়েছি। তখনও বুঝি নি কাজটা যে এত সাড়া পাবে। নতুন কোন কাজে দেখা যায় নি কারণ, এরপর আমার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। বিয়েও হয়ে যায়। এরপর নিজের পড়াশোনা শেষ করে নেদারল্যান্ডসে উচ্চতর শিক্ষা নিতে যাই। সেখান থেকে ২০১৬ তে দেশে ফিরি। এরপর ব্যস্ততার কারণে আর সেই সুযোগ হয়ে উঠে নি। নাফিয়া থেকে দীপান্বিতা, এরপর দারুণ সাড়া! অনুভূতি কেমন? নাফিয়ার জবাব, অভিনয় করার ইচ্ছে ওরকমভাবে ছিল না। স্বরাজ ভাইয়া, জীবন ভাইয়া ও আরও যারা ছিলেন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। কাজটা যখন সবদিকে খুব সাড়া পেতে লাগলো তখনও আমার মধ্যে প্রথমদিকে বাড়তি কোন অনুভূতি কাজ করছিল না। আমি যখন বাসে চড়তাম তখন দেখি গানটির টিউন অনেকের মোবাইলে, এরপর শপিং করতে গেলে শপিংমলের প্রায় দোকানগুলোতে দেখতাম ‘দীপান্বিতা’ গানটা বাজতো। তখন আশেপাশের মানুষজন আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো আর বলতো ‘গানটার নায়িকা’! কয়েকজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করতো, আমি দীপান্বিতা কিনা! তখন আমি মাথা নিচু করে বলতাম ‘জ্বি’। এরপর অনেকেই আমার সাথে ছবি তুলতে আসে, আমার খুব লজ্জা লাগতো তখন। যখন যেখানে যেতাম সবাই শুধু ‘দীপান্বিতা’ বলে ডাকতো আর ছবি তুলতে চাইতো। এরকম যখন অনেকদিন চলতে লাগলো তখন ফিল করতে শুরু করলাম সেই আনন্দটা। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত সাড়া পাচ্ছি। এটা আসলে একটা অন্যরকম ভালো লাগা। দীপান্বিতার কাছে আমার আসল নামটাই হারিয়ে গেলো। আবারও কি কাজে দেখা যাবে আপনাকে, নাকি আর কখনও কাজ করবেন না বলে মনস্হির করেছেন? নাফিয়া জানান, এই কাজটির পর আমি একটানা অনেকদিন অনেক কাজের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু পড়াশোনার কারণে করতে পারি নি। তবে এখন ইচ্ছে আছে আবারও কাজ করার, যদি সেরকম সুযোগ পাই। এবছরই আমি পিএইচডি করতে যাচ্ছি দেশের বাইরে, এখন করোনার এই খারাপ সময়টা না আসলে এতদিনে আমার প্রসেসিং অনেকটুকু হয়ে যেতো। এখন হয়তো বছর শেষে যেতে হবে। রাজশাহীর মেয়ে নাফিয়া বিনতে রায়হান তূর্ণা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যজীবন ও মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপরই নেদারল্যান্ডস চলে যান উচ্চতর শিক্ষার জন্য। ২০১৬ সালে দেশে ফিরেন। এখন সপরিবারে যশোরে অবস্থান করছেন তিনি।