আজকের দিন তারিখ ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য ৬ মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ ১৬৬৭০ কোটি টাকা

৬ মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ ১৬৬৭০ কোটি টাকা


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ , ৪:৩১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ৬ মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৫৩.৯৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৬৭০ কোটি ১০ লাখ টাকা। এই ধারাবাহিকতায় অব্যাহত থাকলে অর্থবছরের শেষদিকে লক্ষ্যমাত্রা পূরন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আলোচ্য সময়ে মোট বিতরণ করা ঋণের শস্য খাতে দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা, সেচ সরঞ্জাম কিনতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১৪৯ কোটি, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১১৩ কোটি, গবাদি পশু এবং হাঁস মুরগির খামারে ৩ হাজার ৪৮৫ কোটি, মৎস্য খাতে ২ হাজার ১৮ কোটি, শস্য গুদামজাত এবং বিপণনে ৮৭ কোটি, ব্যক্তিগত খাতে এক হাজার ১৪ কোটি এবং অন্যান্য খাতে এক হাজার ৯০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে অগ্রণী ব্যাংকের জন্য ৭০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটি ছয় মাসে ২৯৭ কোটি টাকার বিতরণ করেছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪২.৫৫ শতাংশ। বেসিক ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ১৫০ কোটি। কিন্তু ১৩ কোটি টাকা বিতরণ করে ৯ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে ব্যাংকটি। এদিকে, সোনালী ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ২৩০ কোটি টাকা। গত ছয় মাসে ব্যাংকটি ৫৮২ কোটি টাকা বিতরণ করে লক্ষ্যমাত্রার ৪৭ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি কৃষি ঋণ বিতরণ করে কিছু ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক আছে যারা প্রতি বছরই ব্যর্থ হয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। এজন্য অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কৃষি ও পল্লী ঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ এই ফান্ডে জমা রাখতে হবে। কৃষি খাতে অধিক ঋণ দিতে সক্ষম ব্যাংকগুলোকে এই তহবিল থেকে অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক যদি ১০০ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে, আর বছর শেষে যদি ৮০ টাকা বিতরণ করে, তাহলে অবশিষ্ট ২০ টাকা বিবিএডিসিএফ এ জমা করতে হবে। তহবিল গঠন সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর বার্ষিক কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের জন্য ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ)’ নামে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশের সমপরিমাণ অর্থ এ তহবিলে জমা রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই জমাকৃত অর্থের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ দেবে। বিবিএডিসিএফে জমাকৃত অর্থ ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী এবং সক্ষমতার ভিত্তিতে বরাদ্দ করা হবে। ব্যাংকগুলো বরাদ্দপ্রাপ্তির সর্বোচ্চ ১৮ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে ২ শতাংশ হারে সুদসহ আসল পরিশোধ করবে। এই তহবিল থেকে টাকা নিয়ে কী করা যাবে তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো বরাদ্দ পাওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ৮ শতাংশ সুদে কেবল নিজস্ব শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কৃষিঋণ হিসেবে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করতে পারবে। ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকগুলো ঋণের ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে ‘বিবিএডিসিএফ’ থেকে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণের ১ শতাংশ সুদের সমপরিমাণ অর্থ জমা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা তহবিল গঠন করতে হবে। পাশাপাশি বিতরণকৃত ঋণের ১ শতাংশ সুদের সমপরিমাণ অর্থসংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিপত্রে রিজার্ভ হিসেবে রাখতে হবে, যার ঘোষণা বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে থাকতে হবে। এই তহবিল থেকে টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলো যে ঋণ দেবে, তার ৪ শতাংশ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তার আয় খাতে নিতে পারবে। উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি।