আজকের দিন তারিখ ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// ৭ দিনে হিট স্ট্রোকে ১০ জনের মৃত্যু

৭ দিনে হিট স্ট্রোকে ১০ জনের মৃত্যু


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৩০, ২০২৪ , ৫:৩৫ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : গত ৭ দিন সারা দেশে হিট স্ট্রোকে ১০ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। গতকাল কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর মধ্যে সোমবার ৩ জন মারা গেছেন উল্লেখ করে অধিদপ্তর জানিয়েছে, হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া ৩ জনই পুরুষ। এছাড়া হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গত ২২ এপ্রিল থেকে কন্ট্রোল রুম মনিটরিং করে সারা দেশ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে এক কর্মকর্তা জানান। কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, হিট স্ট্রোকে গতকাল মারা যাওয়া ৩ জনের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে মাদারীপুর জেলায়। আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এদিকে, চলমান তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত রাজধানী ঢাকার জনজীবন। এর কারণ হিসেবে সামনে এসেছে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। যার ফলে পরিবেশে তৈরি হয়েছে অত্যাধিক গরম। এক পরিসংখ্যান বলছে, গত ৭ বছরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা মহাখালী এবং গুলিস্তান এলাকার। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) করা ২০১৭ ও ২০২৪ সালের ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রার তারতম্যের মূল্যায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সালে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গড় তাপমাত্রা ছিলো ৩৩.৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ২০২৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৩৬.৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে ২০১৭ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গড় তাপমাত্রা ছিলো ৩৩.৩৯ ডিগ্রি। ২০২৪ সালে সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ৩৭.৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়। ক্যাপসের ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গ্রীষ্মের সময়ে ২০১৭ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মতিঝিল এলাকায় তাপমাত্রা ছিলো ৩৫.৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে ২০২৪ সালে এসে দেখা গেছে মতিঝিল এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। অর্থাৎ গত ৭ বছরের ব্যবধানে এই এলাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে ৩.৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে রাজধানীর অন্যতম জনবহুল ও ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানে ২০১৭ সালে তাপমাত্রা ছিলো ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২৪ সালে এসে দেখা গেছে গুলিস্তানের বর্তমান তাপমাত্রা ৪০.০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ধানমন্ডি এলাকায় তাপমাত্রা ছিলো ৩২.৫০ ডিগ্রি, ২০২৪ সালে এই এলাকায় তাপমাত্রা আগের তুলনায় বেড়েছে ৫.৫৪ ডিগ্রি। গত ৭ বছরের ব্যবধানে ঢাকায় সবচেয়ে গরম বেড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে। এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে মহাখালী এলাকায়। এই এলাকায় ২০১৭ সালে তাপমাত্রা ছিলো ৩৩.৫০ ডিগ্রি। ২০২৪ সালে সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ৪১.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত ৭ বছরের ব্যবধানে মহাখালীতে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৭ ডিগ্রি। অন্যদিকে তেজগাঁও, মিরপুর ১০, ফার্মগেট এলাকায় গত ৭ বছরের তুলনায় তাপমাত্রা বেড়েছে সাড়ে ৩ ডিগ্রির বেশি। তাপমাত্রার এমন তারতম্য নিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বর্তমানে যে তাপপ্রবাহ চলছে এটি আমাদের দীর্ঘদিনের পরিবেশ দূষণের ফল। এই তাপপ্রবাহ একদিনে বাড়েনি। শুধু সাম্প্রতিক তারতম্যে দেখা যায় গত ৭ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা অনেক বেড়েছে। যেখানে ২০১৭ সালেও গ্রীষ্মকালে ঢাকার তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রির নিচে ছিলো যা এখন ৩৮ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি আমাদের অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বাতাস সঞ্চালন না হওয়া, সবুজ নিধন হওয়ার ফলে প্রতিবছর ক্রমান্বয়ে ঢাকার তাপমাত্রা বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে হলে যেসব ফ্যাক্টর দরকার আমরা সেসব নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছি। সাধারণত জলাধার এবং সবুজের উপস্থিতি কোনো এলাকাকে শীতল রাখে। কিন্তু আমাদের শহরের আয়তন অনুযায়ী সেই পরিমাণ জলাধার ও সবুজ নেই। অপরিকল্পিত বিল্ডিং গড়ে ওঠার কারণে বায়ুপ্রবাহ ঠিক নেই। এসব ঠিক থাকলে তাপমাত্রা কিছুটা সহনশীল পর্যায়ে থাকতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।