সাভারে ফুটপাত দখল করে প্রভাবশালীদের ব্যবসা
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৩, ২০১৬ , ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
সাভার (ঢাকা): ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ফুটপাত দখল করে বসেছে দু’টি দোকান। প্রতিদিনের ভাড়া ১ হাজার ৫শ’ টাকা। সে হিসেবে মাসে ৪৫ হাজার টাকা। জায়গার মালিক সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
এই কথিত ভাড়া নামের চাঁদার ভাগ বাটোয়ারার দ্বন্দ্ব নিয়েই পেরেশানিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদেেরই একজন আবুল কাসেম। তিনি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব দিকে রাজ্জাক মার্কেটের সামনের ফুটপাতের মাছ ব্যবসায়ী।
এই দুটি দোকানের ‘কথিত ভাড়া’ নামের চাঁদা পরিশোধ করেই ব্যবসা করতে হতো তাকে। সাড়ে ৭শ’ টাকা হিসেবে প্রতিদিন গুণতে হতো নগদ ১৫শ’ টাকা।
রাজনৈতিক পালা বদলের সঙ্গে দ্রুত বদলে যায় মালিকানা। আবার প্রভাব অথবা ক্ষমতার উত্থান পতনেও পরিবর্তিত হয় মালিকানা।
সেই সময়টাতেই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় আবুল কাশেমের মতো ব্যবসায়ীদের। জোর যার মুল্লুক তার। যে কারণে দৈনিক ১শ’ টাকার ভাড়া গিয়ে ঠেকেছে ১৫শ’ টাকায়।
তা দিয়েই ছয়জন কর্মচারী নিয়ে কোনক্রমে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন আবুল কাশেম। কিন্তু বিধি বাম। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই নতুন উৎপাত।
সাভার পৌরসভার এক কাউন্সিলরের ভাই এসে বলে গেছেন, দোকান চালাতে হলে গুণে গুণে তাকেই টাকা দিতে হবে।
আর এ নিয়েই দ্বন্দ্ব আর সংঘাতে গত দুদিন ধরে দোকান পাট বন্ধ রেখে মূলত বেকার জীবন যাপন করছেন ক্ষুদ্র এই ব্যবসায়ী।
কেন?
না খেয়ে থাকি। তবুও গুলি খেতে পারবো না-সাফ জবাব আবুল কাশেমের।
তিনি বলেন, শক্তি প্রদর্শন হয়। আর ঠ্যালাগুলো এসে পড়ে আমাদের ওপর।
দিনে ১৫শ’ টাকা ভাড়া দিয়ে অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের পর মাছ বেচে আর কত টাকা লাভ থাকে!
এমনিতেই দেনা-দায় বেড়ে গেছে।তার ওপর এসব উৎপাতে দোকানই বন্ধ রেখেছি। আমাদের চাঁদা দিতে সমস্যা নেই। কিন্তু কর্তৃত্ব কার, সেটা আগে ঠিক করে আসুক।
তিনি জানান, আগে নিয়মিত চাঁদা দিতে হতো সাভার উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সেলিম মন্ডলকে।
ইউনিয়র পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও পান তিনি। আবার নাটকীয়ভাবে তা প্রত্যাহার করেও নেয় দল।
এই পরিস্থিতিতে বেকায়দায় থাকা সেলিম মন্ডলের চাঁদাবাজির হাট দখলে নামে পৌরসভার কাউন্সিলরের এক ভাই।
ফুটপাত তুমি কার? এই প্রশ্নটাকে পেছনে ফেলে চাঁদার মালিক কে হবে তা নির্ধারণেই বিবদমান পক্ষগুলোর মাঝে সূচনা হওয়া সংঘাত আর দ্বন্দ্বের শেষ কোথায় তা নিয়েও চিন্তিত ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সেলিম নামের ওই কাউন্সিলর বলেন, পৌরসভা থেকে ইজারা দিয়েই ইজারার টাকা চাওয়া হয়েছে। এসবের মধ্যে আমার ভাই জাহিদের নাম উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে।
তবে ফুটপাত তো সড়ক ও জনপথের। পৌরসভা কি করে ইজারা দেয়? আর খাজনা দোকান প্রতি দিনে ১৫শ’ টাকা কি করে হয় এসবের কোন সদুত্তর মেলেনি।