ঈদের পর আন্দোলনের ইঙ্গিত বিএনপির
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৬, ২০১৬ , ৯:০৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ইঙ্গিত দিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ঈদের পরে আমাদের কিছু রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব পালনের জন্য আপনাদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে পল্লবী ও রূপনগর থানা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গয়েশ্বর। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সরকারের সমালোচনা করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে গণতন্ত্রের নামে দুর্বৃত্তায়ন চলছে। সরকারের অনুমতি ছাড়া কেউ কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারে না। এর নাম কি গণতন্ত্র?’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশ ও দেশের ১৬ কোটি মানুষের আতঙ্ক’ এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ‘খুনের কারখানা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘এই ইসি গত তিন মাসে জনগণের ভোটের প্রতারণার মধ্য দিয়ে দেশে একটি হত্যাযজ্ঞ প্রতিষ্ঠা করেছে। সুতরাং একে নির্বাচন কমিশন বলা যায় না। এই তথাকথিত নির্বাচন কমিশন হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য বিষ। মানুষের ভোটাধিকার ধ্বংস করার জন্য এই ইসি যে পারঙ্গম প্রতিটি নির্বাচনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা তা প্রমাণ করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকারের নির্বাচন কমিশনের অধীনে মসজিদ, মাদরাসা ও স্কুল কমিটির নির্বাচনও নিরাপদ না। আর অন্য কোনো নির্বাচনের কথা বলার প্রয়োজন নাই। এদের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হতে পারে না।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘এই সরকার আবার তাদের নিবন্ধনের আরেকটি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির চেয়েও একটি জঘন্য নির্বাচন করার ইচ্ছা ও পায়তারা করছে। বিএনপি একটি নির্বাচনমুখি দল হওয়া সত্ত্বেও কোনো প্রহসনের নির্বাচনে তারা কখনোই অংশ নেবে না, যে নির্বাচনে আগেই ফলাফল নির্ধারিত হয়ে যায়।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির অনেক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে জেলে রয়েছে, আরো যদি হাজার খানেক নেতাকেও জেলখানায় নেয়া হয়, তারপরও আজকের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের বাসর ঘর বাংলাদেশে হতে দেয়া হবে না।’
গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আজকে দেশের কোনো মানুষ নিরাপদ নয়। পুলিশ সুপারের স্ত্রী প্রকাশ্যে রাস্তায় খুন হলো। মসজিদের ঈমাম, পাদ্রি, মন্দিরের পুরোহিত, ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হচ্ছে। মাতৃগর্ভের শিশুও গুলিবিদ্ধ হচ্ছে। অথচ সরকার বলছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। যারা দেশ ও দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেবে, তারাই আজ নিরাপদ না।’
২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বড় বড় বাজেট, আনন্দের সীমা নেই। কিন্তু কার জন্য বাজেট? উন্নয়নের নামে লুটপাটের বাজেট, পকেটমারের বাজেট। এই সরকার ব্যবসায়ীদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে।’
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য কেন, এই সরকারের কাছে কোনো নগণ্য ব্যক্তির মুক্তি দাবি করা আর নদীর তীরে নীরবে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলা একই কথা।’
পল্লবী থানা বিএনপি নেতা এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মো. আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক মিলন মেহেদী, কাউন্সিলর মেহেরুন্নেসা হক, বিএনপি নেতা বজলুল বাসিত আনজু, ইউনূস মৃধা, মাহফুজ হুসাইন খান সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ইয়াছিন আলী, যুবদল পল্লবী থানা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ছাত্রদল পল্লবী থানা সভাপতি নূর সালাম প্রমুখ।