চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি পোশাক খাতকেও ছাড়িয়ে যাবে: শিল্পমন্ত্রী
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৯, ২০১৬ , ৩:২৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: দেশে চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি তৈরি পোশাক খাতকেও ছাড়িয়ে যাবে। দেশীয় টেস্টিং ল্যাবরেটরিগুলোর অ্যাক্রিডিটেশন সনদ অর্জনের মাধ্যমে এটা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডিসিসিআই মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এ আশা প্রকাশ করেছেন। ‘সরকার ও নিয়ন্ত্রকদের নীতি নির্ধারণে সহায়তার ক্ষেত্রে অ্যাক্রিডিটেশন একটি বৈশ্বিক হাতিয়ার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এ আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ট্যানারি কারখানাগুলো সাভারে স্থানান্তর শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরিই এ প্রক্রিয়া সমাপ্ত হবে।’
বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস- ২০১৬ উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএবি’র মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ আবু আবদুল্লাহ। এতে সিনিয়র শিল্পসচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি এবং ডিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট হোসেন খালেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে লুবরেফ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগারের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা ও টেস্টিং ল্যাবরেটরির কর্মকর্তারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে শিল্প সমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে। সরকারের প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। গুণগতমানের পণ্য উৎপাদনের প্রচেষ্টা জোরদার করে ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। দেশিয় মান গবেষণাগারের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ অর্জন এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ছাড়া বিশ্ববাজারে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব নয়। গুণগতমানের ফলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। খুব শিগগিরই এটি শীর্ষ স্থান দখল করবে। এর পাশাপাশি পাট, প্লাস্টিক, চামড়া, মৎস্য ও অন্যান্য শিল্পপণ্যের গুণগত মানোন্নয়নে প্রচেষ্টা চলছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মানোন্নয়নের প্রচেষ্টা জোরদার করলে বাংলাদেশি পণ্য সহজেই আন্তর্জাতিক বাজার দখলে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশ্বমানের মান অবকাঠামো গড়ে তোলার ফলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের মৎস্য রপ্তানির বাঁধা কেটে গেছে। ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ক্রেতারা বাংলাদেশি মৎস্য টেস্টিং ল্যাবরেটরিগুলো পরীক্ষা করে গুণগতমানের বিষয়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। এর ফলে এখন ইইউতে চিংড়ি রপ্তানির জন্য টেস্টিং সনদ সংযুক্ত করার প্রয়োজন হচ্ছে না। অন্যান্য শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে এ ধরনের অ্যাক্রেডিটেড টেস্টিং ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা গেলে, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় অনেক বেড়ে যাবে। তারা দক্ষ জনসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাক্রেডিটেশন সেবা সম্প্রসারণ করতে বিএবি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উল্লেখ্য, বিএবি এ পর্যন্ত মোট ৪৩টি প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করেছে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের নাজদাত-ইউটিএসসহ ৫টি প্রতিষ্ঠানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ প্রদান করা হলো।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর হাত থেকে সনদ গ্রহণ করেন ওয়ালটন গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (পলিসি, এইচআরএম অ্যান্ড এডমিন) এস এম জাহিদ হাসান। অন্য চার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জুলফার বাংলাদেশ লিমিটেড, আম্বার গ্রুপের আম্বার টেক্সটাইল সার্ভিসেস লিমিটেড, কিউটেক্স সলিউশনস্, হোলসিম বিডি’র কংক্রিট ইনোভেশন অ্যান্ড এপ্লিকেশন সেন্টার । এসব প্রতিষ্ঠান গুণগতমান নিশ্চিত করে পণ্য উৎপাদন ও টেস্টিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে।