আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
রাজনীতি খুনের পেছনে আওয়ামী লীগ: খালেদা জিয়া

খুনের পেছনে আওয়ামী লীগ: খালেদা জিয়া


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১০, ২০১৬ , ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি


Khaledaকাগজ অনলাইন ডেস্ক: গুপ্তহত্যায় বিএনপি-জামায়াতের জড়িত থাকার তথ্য আছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পাল্টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দাবি করেছেন,আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক মিত্ররাই এতে জড়িত।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের একদিন বাদে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসপিপত্নীসহ সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তিনি।

খালেদা বলেন, “আজ পুলিশ অফিসারের ওয়াইফ পর্যন্ত হত্যা হয়। এটা কেন হল হাসিনা? এটা এখন পর্যন্ত বের করা গেল না কেন? এসব কারা করছে?

“আমি বলতে চাই, এসব খুন-গুম-হত্যার সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত এবং তার সঙ্গে তার দোসররা যারা আছে, তারা জড়িত। তাদের ধরলেই সব কিছু বের হবে।”

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট শরিক জাসদের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “নাম না-ই বা বললাম, আপনারা সবাই জানেন। তারা যে কত মানুষ হত্যা করেছে, কত মানুষকে খুন করেছে, জনগণ জানে।

“খুন-গুমে সিদ্ধহস্ত হল হাসিনার সঙ্গে যারা আছে, তারাই হল গুম-খুনের ওস্তাদ। এই যে পেট্রোল বোমা তাদের আবিষ্কার, তারাই প্রথম বানিয়ে মানুষ হত্যা শুরু করে।”

“তাই আমরা বলতে চাই, হাসিনার সহযোগিতায় তারা যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই খুন-গুম-হত্যা-সন্ত্রাস বন্ধ হবে না,” বলেন খালেদা।

গত এক বছরে লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের হত্যার পাশাপাশি বিদেশি, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান যাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষু আক্রান্ত হওয়ার পর সম্প্রতি চট্টগ্রামে একই কায়দায় খুন হন এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী।

সংসদ নির্বাচনের আগে এবং গত বছর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নাশকতার দিকে ইঙ্গিত করে এসব হত্যাকাণ্ডেও বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

অন্যদিকে বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে বলে আসছিল, ক্ষমতাসীনদের ‘বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে’ জঙ্গিরা আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

এর মধ্যেই নিজেদের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন,“আমরা যখন কথা বলি, মনে রেখে দেবেন; কোনো অমূলক কথা বলি না। একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, আমি হেড অফ দি গভার্নমেন্ট। আমার কাছে নিশ্চয়ই তথ্য আছে।”

এর প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে সরাসরি আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক মিত্রদের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়লেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।

রাষ্ট্রক্ষমতায় ‘খুনিরা’ বসে আছে দাবি করে তিনি বলেন, “নিরীহ মানুষকে খুন করছে, মন্দিরের পুরোহিত, রিকশা-ভ্যানচালক, মুদি দোকানদার-এসব নিরীহ মানুষকে খুন করা হচ্ছে। হিন্দুদের সম্পত্তি লুট করা হচ্ছে, খ্রিস্টানদের সম্পদ, বৌদ্ধদের সম্পদ লুট করা হচ্ছে, তাদের হত্যা করা হচ্ছে।

“স্বাধীনতার পরেও আওয়ামী লীগ লুট করেছে, মানুষ হত্যা করেছে। এখন তারা লুট করছে, মানুষ হত্যা করছে ক্ষমতায় থাকার জন্য আজীবন।”

নারায়ণগঞ্জের সাত খুন নিয়ে তিনি বলেন, “এখনও সেই বিচার হচ্ছে না। সেই বিচার হলে সেখানে জিয়ার ( জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জিয়াউল আহসান) নাম আসবে, পুলিশ অফিসার বেনজীরের ( র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ) নাম আসবে।

“এখানে স্বয়ং হাসিনার নাম আসবে, হাসিনা এর মধ্যে ইনভলবড। তাই এই বিচার হচ্ছে না।”

সবার জন্য সুবিচার নিশ্চিতে বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আমি অনুরোধ রাখব প্রধান বিচারপতিসহ সকল জাজদের কাছে, সকল আইনজীবীদের কাছে- আমরা আইনের শাসন চাই, আমরা সুবিচার চাই, আমরা ন্যায়বিচার চাই। যাতে সকলের জন্য সমান বিচার হয়।

“আমাদের বিচারগুলো দ্রুত করছেন। ওইসব হত্যাকাণ্ডের বিচারগুলো দ্রুত করে একসঙ্গে বিচারগুলো শেষ করার ব্যবস্থা করুন। দেখেন কার সাজা হয়।”

‘হাসিনার বিচারও করতে হবে’

সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় আইনজীবীদের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্যে সবার জন্য সুবিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

তিনি বলেন, “জনগণ বিশ্বাস করে না যে বিচার বিভাগের আজকে কোনো স্বাধীনতা আছে। আইন না কি সকলের জন্য সমান। তাহলে সরকারের জন্য একরকম আইন, বিরোধী দলের জন্য অন্যরকম আইন কেন?

“আজকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে, জেলে নেওয়া হচ্ছে। ওদিকে সরকারি দলের লোকজন অপরাধ করলেও তাদেরকে ধরা হয় না।”