আজকের দিন তারিখ ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় এমন বিষণ্ণ পহেলা বৈশাখ যেন আর কখনো না আসে

এমন বিষণ্ণ পহেলা বৈশাখ যেন আর কখনো না আসে


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১৪, ২০২০ , ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


শ্যামল দত্ত ।
টমাস স্টার্নস এলিয়ট বা আমরা যাকে টি এস এলিয়ট নামে জানি, ১৯২২ সালে ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ কাব্যগ্রন্থে ‘দ্য বারিয়েল অফ দ্য ডেড’ কবিতায় লিখেছিলেন ‘এপ্রিল ইজ দ্য ক্রুয়েলেস্ট মান্থ’। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে কবিতার নবজাগরণের যাত্রার অন্যতম একটি বই ছিল এটি। বইটি তিনি উৎসর্গ করেছিলেন তার আরেক বন্ধু মার্কিন কবি এজরা পাউন্ডকে। যিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন ইতালির ভেনিসে। পরে তিনি হয়ে উঠেছিলেন মুসোলিনের সমর্থক। এজরা পাউন্ড এবং উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ- দুজনেই এপ্রিল নিয়ে কবিতা লিখেছেন, তবে একেবারেই ভিন্ন স্বাদে। প্রায় একই সময়ে আরেক বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এপ্রিলকে করেছেন বর্ণাঢ্য। লিখেছেন ‘বৈশাখ’ কবিতায়- ‘এসো হে বৈশাখ, এসো হে এসো, তাপস নিঃশ্বাস বায়ে, মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে।’
এই এপ্রিল মাসেই এক মহামারি ভাইরাসে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা এখন বিশ্বে এক লাখ ছাড়িয়েছে। টি এস এলিয়ট কি জানতেন এপ্রিল মাস হবে আমাদের মরণঘাতী মাস? অথচ এপ্রিল মানে তো উৎসবের মাস, আনন্দের মাস অন্তত এই উপমহাদেশে। ইরান থেকে জাপান পর্যন্ত- এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কোথাও না কোথাও নানা নামে পুরো সময়টা জুড়ে শুধু উৎসব আর উৎসব। তবে কেন কবি লিখেছিলেন আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে এপ্রিল হবে নিষ্ঠুরতম মাস! তবে কি কবিরা ভবিষ্যৎদর্শী? পুরো পৃথিবী যখন মৃত্যুপুরী, তখন আজকের এপ্রিল কী আমাদের সামনে কবির সেই ভবিষ্যৎ বাণীকেই তুলে ধরে?
পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে সেই সূর্যটি এবার উঠবে না সেতারের মূর্ছনায়। রাগ ভৈরবীর তালে দুলে উঠবে না নবপত্রপল্লব। কারণ মানুষের জীবনের উৎসবের রং বিষণ্ণতার কালো রংয়ে ছেয়ে গেছে। ভয়, আতঙ্ক আর মৃত্যুচিন্তা যখন দরজায় কড়া নাড়ে, উৎসব তখন রং ছড়ায় না। ছড়ায় জীবনের দীনতা। অসহায়ত্ব আর ক্লান্তি।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি, ডা. সারওয়ার আলী সোমবার (১৩ এপ্রিল) এক আলাপচারিতায় বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ১৯৬৭ সাল থেকে যে রেওয়াজ, রমনার বটমূলে সূর্যোদয়ের সঙ্গে বর্ষোদয়ের যে বর্ষ আবাহন সেটা এবার হচ্ছে না, গত তিন বছরের অনুষ্ঠানকে নিয়ে বর্তমান সময়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে গানে-কবিতায় এক ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে, যা প্রচারিত হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সকাল ৭টায়। নতুন সংযুক্ত হয়েছে সনজীদা খাতুনের সংক্ষিপ্ত একটি বক্তব্য। ড. সারওয়ার আলী আরো বললেন, ১৯৬৭ সালে শুধু আইয়ুবের প্রতিবাদ নয়, ১৯৬৬-তে বঙ্গবন্ধু যে ৬ দফা ঘোষণা করলেন, তার মধ্য দিয়ে বাঙালির জাতীয়তাবোধ তৈরির যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার তার সাংস্কৃতিক প্রকাশ দিল রমনার বটমূলের এই অনুষ্ঠান। তিনি বললেন, রাজনীতি এবং সংস্কৃতি- তখন এক সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছে। এখন সংস্কৃতি উধাও হয়ে গেছে রাজনীতি থেকে
আরেকটি কাকতালীয় ঘটনা হচ্ছে, ১৯৬৭ সালে ১লা বৈশাখে রমনার বটমূলে ছায়ানট যখন পাকিস্তানি শাসনের রক্তচক্ষুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে, সেদিন বঙ্গবন্ধুসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার কারাগারের রোজনামচায় লিখেছেন। ১৯৬৭ সালের ১৫ এপ্রিল, বাংলা ১৩৭৪ সাল, পহেলা বৈশাখ। আইয়ুব খানের শাসনামলে বঙ্গবন্ধুসহ অসংখ্য রাজবন্দী তখন কারাগারে। নববর্ষের সকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা বঙ্গবন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে তার সেলে আসলেন। ১০ নম্বর সেল থেকে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী এক টুকরা কাগজে বঙ্গবন্ধুকে একটা কবিতা লিখে পাঠান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার কারাগারের রোজনামচায় যেভাবে লিখেছেন, সেখান থেকে সেভাবেই উদ্ধৃত করছি :

আজকের নতুন প্রভাতে নতুন বর্ষের আগমনে
-মুজিব ভাইকে
‘বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেউ রও
ক্ষমা করো আজিকার মতো,
পুরাতন বরষের সাথে,
পুরাতন অপরাধ হতে।’
নববর্ষের শ্রদ্ধাসহ মিজান
১ লা বৈশাখ ১৩৭৪ সাল।

পাকিস্তানি শাসনে তখনো অবরুদ্ধ বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা জেলে। ছায়াটনটই তখন প্রতিবাদী অনুষ্ঠান নিয়ে রমনার বটমূলে। সেই থেকে রমনার বটমূল হয়ে উঠল বাঙালির নিজস্ব পরিচয়ের উৎসমূল। নিজেকে চিনে নেয়ার অনন্য স্থান। কিন্তু রমনার বটমূল থাকবে এবার খালি। করোনা পীড়িত এবার এই বাংলায় নববর্ষ উদযাপিত হবে না সঙ্গীত, নৃত্য, লাঠিখেলা, বলীখেলা, হাডুডু, ঘুড়ি উড়ানো, ষাঁড়ের লড়াই, কিংবা ঘোড়দৌড়। পহেলা বৈশাখ এবার পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে নতুনের সূচনা করবে না। কারণ সূচনার যে নতুন একেবারেই আমাদের কাছে অন্ধকারাচ্ছন্ন, অজানা এবং আতঙ্কের। নতুন বছরের প্রথম দিনে নতুন আশা, নতুন আনন্দ কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এখন মানুষের জন্য আমরা কী কল্যাণ কামনা করবো। কারণ এবার হবে না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, হবে না হালখাতা, হবে না রাজপূণ্যাহ, নতুন হিসাবের খাতা খোলা, বৈশাখী মেলা যেসব মেলায় কৃষিপণ্য ঐতিহ্যবাহী আসবাবপত্র, খেলনা, প্রসাধনী দ্রব্য এবং বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন বিক্রি হতো। কণ্ঠশিল্পী, নৃত্যশিল্পী অভিনেতা, ছদ্মবেশী ভাঁড়, এবার থাকবে না তাদের বিভিন্ন ধরনের নৃত্য, যাত্রাপালা, গান, কবিগান, জারিগান, গাজীর গান, লোকসংগীত, ভাটিয়ালি গান। হবে না মুন্সীগঞ্জের ষাঁড়ের লড়াই কিংবা চট্টগ্রামের বলীখেলা অথবা রাজশাহী অঞ্চলের গম্ভীরা গানের প্রতিযোগিতা। থাকবে না বিভিন্ন ধরনের লোকসংগীত বিশেষ করে বাউল, মারফতি, মুর্শিদি, ভাটিয়ালি গান, পুতুল খেলা কিংবা জাদুর খেলা, কবুতর উড়ানোর প্রতিযোগিতা। পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বৈশাখ, মারমাদের সাংগ্রাই আর চাকমাদের বিজু- এই তিন অনুষ্ঠান মিলে বৈসাবি। পাহাড় আক্রান্ত অসুখে, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উৎসব তা আজ আর নেই।
শুধু বাংলার নববর্ষ নয়, নানা নামে, নানা দেশে নববর্ষের উৎসব- থাইল্যান্ডের ‘সংক্রাণ উৎসব’, বার্মার ‘মহাদী জ্ঞান’, তিব্বতের নববর্ষের উৎসব ‘লোসার’, ভিয়েতনামের নববর্ষ ‘নুয়েন ডান’- কোনোটাই হবে না এবার। কারণ পুরো বিশ্ব আক্রান্ত অজানা অসুখে, যে অসুখের প্রায় অনিবার্য পরিণতি মৃত্যু। মৃত্যুকে চোখের সামনে রেখে মানুষ তো আর উৎসব করতে পারে না।

সম্রাট আকবরের আমল থেকে বাংলা সনের যাত্রা শুরু হয়েছিল মূলত একটি ফসলি সন সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে। ১৫৮৬ খ্রিস্টাব্দে ৫ নভেম্বর হিজরি সন, চন্দ্র সন ও ইংরেজি সনকে যুক্ত করে এই বাংলা সনের প্রবর্তন করা হয়েছিল। প্রথমে এটি ফসলি সন নামে পরিচিত হলেও পরবর্তী সময়ে তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিতি পায়। বাংলার কৃষকরা চৈত্র মাসের শেষ দিন জমিদার-তালুকদার এবং অন্যান্য ভূ-স্বামীদের খাজনা পরিশোধ করত। এক সময় চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো যা পরবর্তী সময়ে বৈশাখী মেলা নামে পরিচিতি পায়। বাংলা সনের প্রবর্তন সম্রাট আকবরের জমিদারি প্রথা সুবিধার জন্য করা হলেও বাংলার ঋতুভিত্তিক এই উৎসব-উদযাপন মূলত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি। বসন্তে বসন্ত উৎসব, পৌষে পৌষ মেলা, মাঘে দোল উৎসব-এর মধ্যে অন্যতম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই উদযাপন উৎসবে পরিণত হলেও এটিই এই জনপদের মানুষের আপন সাংস্কৃতিক চেতনা ঐতিহ্যের এবং নিজের জাতিসত্তার স্মারক হয়ে ওঠে। সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে এক জাতি এক সংস্কৃতি-চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপলক্ষ হয়ে ওঠে পহেলা বৈশাখ। তাই এই দিনটি পরিণত হয়েছে বাঙালি জাতির জীবনের এক মহৎ উৎসবে।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন নতুন মাধুর্য পেলেও বৈশাখী মেলার ঐতিহ্য প্রাচীন বৈশাখী মেলা বাঙালির সংস্কৃতির একটি অনুষঙ্গ এবং অন্যতম একটি লোকঐতিহ্য। একসময় গ্রামাঞ্চলে ৩০ চৈত্র অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তিতে মেলার আয়োজন করা হতো যা ক্রমান্বয়ে বৈশাখী মেলায় ধারণ করে। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাভার, রংপুরের পায়রাবন্দ, দিনাজপুরের ফুলছড়ি ঘাট, মহাস্থানগড়, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মহেশপুর, খুলনার সাতগাছি, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেটের জাফলং, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ এলাকায় বৈশাখী মেলার প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে।

বাংলাদেশ ছায়ানট রমনার বটমূলে নববর্ষ আবাহন আয়োজনের মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখে যুক্ত করেছে নতুন অনুষঙ্গ। ষাটের দশকে আইয়ুব খান সরকার পাকিস্তানে যখন রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিল, তার প্রতিবাদে ছায়ানটের এই আয়োজন হয়ে ওঠে প্রতিবাদী। নব্বইয়ের দশকে চারুকলার কয়েকজন শিক্ষার্থীর উদ্যোগে ‘এসো গাই মঙ্গলের জয়গান’ নামে যে মঙ্গল শোভাযাত্রার সূচনা করে, নববর্ষ উদযাপনে তা যুক্ত করে এক নতুন অনুষঙ্গ। ওয়াহিদুল হক, এমদাদ হোসেন ও ফয়েজ আহমেদসহ আরো অনেকের প্রেরণায় গড়ে ওঠা এই মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন ইউনেস্কোর দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষিত হয়েছে।

১৯৮৮ সালে ১৯ ডিসেম্বর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মদিনে প্রথম শোভাযাত্রা বের করেছিলেন তৎকালীন চারুকলার কয়েকজন প্রতিবাদী ছাত্র। সঙ্গে ছিলেন তরুণ শিক্ষক নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য ও শিল্পী সাইদুল হক জুইসসহ আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিল্পী। ১৯৮৯ সালের ১৪ এপ্রিল এটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রূপ নেয় নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন এর দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে। অগ্রজ বন্ধু চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বললেন, সামাজিক ও রাজনৈতিক থিম নিয়ে গড়ে ওঠা এই মঙ্গল শোভাযাত্রা এবার আর সৃষ্টি করবেন না নতুন প্রণোদনার। এবার তাই ডিজিটাল পোস্টার হবে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীক। সেখানেও আশ্রয় রবীন্দ্রনাথ। ‘মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে সঙ্গী করো নিজেরে করো জয়’, ভয়কে জয় করার রবীন্দ্রনাথের এই অমর চেতনাকে বুকে ধারণ করে আমরা কাঠিয়ে উঠব বিষণ্ণ সময়, বললেন নিসার হোসেন।

আমরা এমন বিষণ্ণ পহেলা বৈশাখ চাই না। চেতনায় দীপ্ত বাঙালি বরণ করবে রঙিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দকে শত দুঃখ-বেদনার মাঝখানেও। কারণ গাছে গাছে তো নতুন পাতা চকচক করছে বৈশাখের এই তপ্ত প্রখর রোদে। বাঙালি তো জেগে উঠবেই ভয়কে উপেক্ষা করে।

না, আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সি’-এর সেই বিখ্যাত লাইন- ‘মানুষ ধ্বংস হতে পারে কিন্তু পরাজিত হয় না।’ এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার ডিজিটাল পোস্টারে এটাও একটা অন্যতম স্লোগান। কারণ মানুষের ওপর বিশ্বাস না রাখলে আমরা এগুবো কী করে?