ঝুঁকিতে নওগাঁর নান্দাইবাড়ি বেড়িবাঁধ
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৫, ২০২০ , ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
নওগাঁ (রাণীনগর) প্রতিনিধি : নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর রাণীনগর অংশের নান্দাইবাড়ি বেড়িবাঁধটি বছরের পর বছর ধরে কোনো সংস্কার কিংবা পুনর্নির্মাণ না করায় উপজেলার ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি, এলাকার প্রায় ৭ কিলোমিটার যমুনা নদীর বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। শুষ্ক মৌসুমে বেড়িবাঁধের কাজ না করায় কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে নদীর পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার চাষিরা বর্ষা মৌসুমের আগেই আতঙ্কে রয়েছে। গত বন্যায় বাঁধটি কয়েক স্থানে ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড হলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় বাড়িঘর ও রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই বাঁধটি নির্মাণের আশ্বাস দিলে বছর পার হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এমন গুঞ্জন আছে এই অভিভাবকহীন বাঁধের সংস্কার কাজের দায়িত্ব নিতে চায় না নওগাঁর কোনো দপ্তরই। তার পরও আশার বাণী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, এই বাঁধটির নির্মানের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া নওগাঁর ছোট যমুনা নদী ২০১৭ সালে নান্দাইবাড়ি এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ কৃষিজাত ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এই জনপদের কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়ে। ভাঙনের সময় উপজেলা পরিষদ ও নওগাঁ পানি উন্নয় বোর্ডের আনাগোনা দেখা গেলেও বাঁশের খুঁটি আর বালুর বস্তা দিয়ে দায়সারা চেষ্টা করে। ৪০ বছর ধরে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা না হওয়ায় এই বেড়িবাঁধটি এখন স্থানীয় কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধিতে এলাকাবাসীর কপালে যেন চিন্তার ভাঁজ। কেননা প্রতিবছরই এই বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় ব্যাপক ফসলহানি ঘটায়। নদীর পানি কৃষির কাজে সুষ্ঠূভাবে ব্যবহারের জন্য আশির দশকে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ী, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকায় স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর কোলঘেঁষে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর পর থেকে সরকারের কোনো দপ্তরই বেড়িবাঁধের সংস্কার কিংবা পুনর্নির্মাণ না করায় বিপৎকালীন বালুর বস্তা আর বাঁশের খুঁটিই যেন শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে এই বাঁধের অবস্থা খুবই বিপজ্জনক। রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম জানান, এই বাঁধটি এলাকাবাসীর জন্য একটি অভিশাপ। জরুরিভাবে এই বাঁধটি মেরামত করা না হলে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়লে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, এই ঝুঁকিপূর্ণ অংশটুকু নদীর বাঁধ নয়। এক সময় রাস্তা ছিল। কিন্তু নদী ভেঙে যাওয়ার কারণে এখন তা বাঁধে পরিণত হয়েছে। তাই আমি এই ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধটি পুনর্নির্মাণের জন্য অর্থপ্রাপ্তির আবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ প্রাপ্তিসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু হবে।