ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ইফতার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৭, ২০২০ , ৮:২০ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া (আশুগঞ্জ) প্রতিনিধি : ‘ব্লাড ফর আশুগঞ্জ’ সংগঠনের মূল কাজ মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্ত দেয়া। রক্ত চেয়ে ফোন করলেই নিজ খরচে গিয়ে রক্ত দিয়ে আসেন সংগঠনটির সদস্যরা। স্বেচ্ছায় রক্তদানের মহৎ এ কাজটি গত দুই বছর ধরে করে আসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এ সংগঠনটি। তবে এবার করোনাভাইরাসের সংকটকালে নিজেদের মানবতার হাতকে আরও প্রসারিত করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা। প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ টোল প্লাজায় দুই শতাধিক গাড়িচালক ও পথচারী রোজাদারকে ইফতার করাচ্ছে ‘ব্লাড ফর আশুগঞ্জ’। ইফতারের ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক হাসান ইমরান ও সমন্বয়ক রাহাত হোসেনের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা ইফতারের প্যাকেট নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকেন। টোল প্লাজায় দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং টোল দেয়ার জন্য দাঁড়ানো অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিসেবায় নিয়োজিত যানবাহন চালক-সহযোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয় ইফতার। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর হওয়ার পর থেকে আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে থাকা ভবঘুরে ও ছিন্নমূল মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে আসছে ‘ব্লাড ফর আশুগঞ্জ’। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিন্নমূল মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থাও করেছে সংগঠনটি। এ ছাড়া পুরো আশুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও হাটবাজারে গিয়ে কয়েক দফা জীবাণুনাশক ছিটিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। লকডাউনের মধ্যে কোনো বহিরাগত যেন আশুগঞ্জ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য আশুগঞ্জ টোল প্লাজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও কাজ করছেন তারা। এবার রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটি। মূলত চলমান লকডাউনের কারণে দোকানপাটসহ সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাদের রাস্তায় ইফতার করতে হয়, সেসব রোজাদারের কথা ভেবেই উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে। প্রথম রোজা থেকেই দুই শতাধিক রোজাদারকে নিজেদের চাঁদার টাকায় ইফতার করাচ্ছেন সংগঠনের সদস্যরা। পুরো রোজার মাসজুড়েই এই ইফতার বিতরণ কার্যক্রম চলবে। ‘ব্লাড ফর আশুগঞ্জ’ সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক হাসান ইমরান বলেন, করোনাভাইরাসের সঙ্কটকালে আমারা রক্তদানের মাঝেই আমাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখিনি। প্রতিদিন রোজাদারদের জন্য ইফতার নিয়ে মহাসড়কে আমাদের সদস্যরা অপেক্ষায় থাকেন। লকডাউনের কারণে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এতে করে রাস্তায় থাকা মানুষ চাইলেও রোজা রেখে ইফতার করার জন্য কিছু কিনতে পারছেন না। তাদের কথা ভেবেই আমরা ইফতার বিতরণের উদ্যোগটি নিয়েছি।