ইউবিজি’র চেয়ারম্যানের অভিযোগ, কাজ করেছে ‘ইউজিবি’ প্রশংসা নিতে চাইছেন অন্যজন
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৩, ২০২০ , ৩:৪৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : সুদুর অস্ট্রেলিয়া থেকেও নিজের দেশের মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে। রানা প্লাজা ধসের সময়ও আহত-নিহত পরিবারে ৮/১০ লাখ টাকা সহায়তা করেন। এরপর আরো এমন অনেক জায়গায়ই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে ইউনাইটেড গ্রুপ অব বাংলাদেশ (ইউজিবি) এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বি. খন্দকার। শুধু তাই নয়; করোনা সংকটে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েও কাজ করেছেন। গত ১লা মে হতে ইউজিবি দশ হাজার লোকের ইফতারি, দুই হাজার পরিবারকে ত্রান এবং পাঁচশত ছিন্নমূল মানুষের জন্য ঈদ উপহারসহ নগদ অর্থ প্রদান করেছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময় অস্ট্রেলিয়াতে বেড়াতে যাওয়া অনেক বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে থাকা অনেক অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশি নাগরিক যখন আটকে পরেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় লকডাউন, কড়া আইন এসবের ভিতরে বেড়াতে যাওয়া বাংলাদেশিরা যখন অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছিলেন তখনও তাদের পাশে দাঁড়ান বি. খন্দকার। একই ভাবে বাংলাদেশে আটকে পরা অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশিরাও যখন চড়ম অনিশ্চতায় ছিল। অস্ট্রেলিয়ার সরকার যেসব শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের অস্থায়ী ভিসা ছিল তাদেরকে যখন দেশ ত্যাগ করতে বলেন। যখন বাংলাদেশি দর্শনার্থীরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদেরকে বিশেষ বিমানের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আবেদন জানানোর পরও কোনো ফল আসেনি। তখনও ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় আটকে থাকা মানুষের সাহায্য চেয়ে করা পোস্ট দেখে এগিয়ে আসেন অস্ট্রেলিয়ার এই বাঙ্গালী ব্যবসায়ী, সেভেনস্টার গ্রুপের কর্ণধার বি. খন্দকার। তিনি আটকে থাকা ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি বুঝে বাংলাদেশ হাই কমিশন, বিভিন্ন এমপি, শ্রীলঙ্কা এ্যায়ারলাইনসহ যাবতীয় সংস্থা ও মানুষের সাথে আটকে পড়া যাত্রীদের আনা- নেয়া করার বিষয়ে কথা বলেন এবং সেই সাথে অস্ট্রেলিয়ায় আটকে থাকা বাংলাদেশিদের থাকা-খাওয়ার সমস্ত দিক দেখাশোনা করেন। এসব কাজে বি. খন্দকাররের সাথে সোনিয়া শাহিদ সুমিও ছিলেন। এই উদ্যোগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেভেনস্টার গ্রুপের স্টাফরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এই উদ্যোগের সিংহভাগ কাজ হওয়ার পরে বি. খন্দকারের সাথে একাত্ত্বা প্রকাশ করে একটি অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা। অতপর বি. খন্দকার তার নিজের ইউজিবি এর কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় তিনি অস্ট্রেলিয়ান সেই সংস্থা এবং সোনিয়া শাহিদ সুমিকে এই উদ্যোগ সম্পন্ন করতে দায়িত্ব দেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ৩০০ এর বেশী যাত্রী অস্ট্রেলিয়াতে এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ১৮২ জন যাত্রী বাংলাদেশে নিরাপদে ফিরে যেতে পারেন। এই প্রসঙ্গে সেভেনস্টার গ্রুপের স্টাফদের সাথে কথা বলতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্টাফ জানান, এই উদ্যোগ প্রথমে আমাদের স্যার বি. খন্দকার নিয়েছেন এবং আমরা তাকে এই কাজে সাহায্য করেছি। কিন্তু কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে অনেক সংস্থা কিছু না করেই কৃতিত্ব নিতে চেয়েছে। এগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট দাবি, আমাদের কাছে এই কার্যক্রমের সকল তথ্য এবং প্রমাণ আছে। কিন্তু আমাদের স্যার বি. খন্দকার চান না মানুষের উপকার করে সেটা নিয়ে নাম কামাতে তাই আমরা তার কথামত চুপ থেকেছি। বি. খন্দকার বলেন, ব্যাপারটি খুবই দুঃখজনক। আমি এবং আমার কোম্পানির স্টাফদের অনেক পরিশ্রমের ফলে আমরা কাজটি করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি এটা নিয়ে অনেকেই নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমরা এতদিন চুপ ছিলাম। আমরা যে কাজটি করেছি এর যথেষ্ট প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। ইউজিবি’র পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথমত আমাদের ইউজিবি’র পরিকল্পনা হচ্ছে দেশের করোনা পরবর্তী যে অসহায়, ছিন্নমূল, নিন্ম-মধ্যবিও সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি কাজ করা। এজন্য ২০০ ভলেন্টিয়ার নিয়ে আমরা ইউজিবি যাত্রা শুরু করতে প্রস্তুত। কিন্ত বর্তমানে পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি আমার ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে অসহায় মানুষদের সেবা করা শুরু করি। ইতিমধ্যে গাজীপুর, জয়দেবপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা,পাবনা, কুষ্টিয়া রংপুরের বিভিন্ন স্থানে ত্রান প্রদান করি। আমি সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য এ্যাপস নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেছি। এতে করে সরকার আরো দ্রুততার সাথে সেবা দিতে পারবে। এ ব্যাপারে তিনি সরকারের দৃষ্টি কামনা করেন।