করোনায় রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছেই
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৫, ২০২০ , ৭:১৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে প্রতিবেদক :করোনা মহামারির কারণে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। এ কারণে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কাটছাঁটও করেছে সরকার। ২৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করার পরও বড় ঘাটতির মুখে পড়ছে জাতীয় ররাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এদিকে চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। আর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শেষ দুই মাসে এনবিআরকে রাজস্ব আদায় করতে হবে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬শ কোটি টাকা। প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা, আর আদায় হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। এই কারণে চলতি বাজেটে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫শ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে ২৫ হাজার ১শ কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এনবিআরকে আদায় করতে হবে ৩ লাখ ৫শ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বছরের মে ও জুন দুই মাসে এনবিআরকে আদায় করতে হবে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা- যা করোনাকালে অসম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতিবারই গতানুগতিক ধারায় বাড়ে বাজেটের আকার। তার সঙ্গে মিল রেখে বাড়ানো হয় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা- যা প্রতিবছরই কাটছাঁটের প্রয়োজন হয়। আর করোনাকালে শেষ দুই মাসে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা অসম্ভব। বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, প্রতিবছর উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়- যার কারণে বছর শেষে বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়তে হয়। এবার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় আরো ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ কোটি টাকা কম হতে পারে বলে জানান এই অর্থনীতিবিদ।
জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ৯ হাজার ৮শ কোটি টাকা কমানো হয়েছে আগেই। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপি ধরা হয়েছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরুতে বাজেট ঘাটতি
ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ২১১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা নামিয়ে আনা হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৬০৯ কোটি টাকায়। এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ভোরের কাগজকে বলেন, সাধারণ অর্থবছরের শেষ মাসগুলোতে রাজস্ব আদায় বেশি হয়। কিন্তু করোনার কারণে অর্থনৈতিক স্থবিরতা রাজস্ব ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব। আর নতুন বছরে এর চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা অবাস্তব বলে মনে করেন এই গবেষক।