রিল আর রিয়েল লাইফ: বলিউডে যত রহস্যাবৃত মৃত্যু
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১৫, ২০২০ , ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: বিনোদন
দিনের শেষে ডেস্ক : সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড রিলে গল্পটা যেরকম, বাস্তব জীবনে সে গল্পটা হয় ভিন্ন, কঠিন আর ভীষণ হতাশার। যেখানে থাকে আকাশ-পাতাল ফারাক। যা ঠেলে দেয় মৃত্যুর দিকে। বলিউডে এ পর্যন্ত মানসিক অবসাদ, আত্মহত্যার মতো ঘটনা দেখা গেছে বহুবার। সর্বশেষ এই তালিকায় নতুন যুক্ত হলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত।
বলিউডে এমনই কিছু অভিনেতার অবসাদ আর আত্মহত্যা সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরা হল।
সুশান্ত সিংহ রাজপুত: ‘কাই পো চে’ এর মধ্য দিয়ে বলিউডে পা রাখেন। ২০০৯ সালে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন ‘পবিত্র রিস্তা’ সিরিয়ালে। এর পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বায়োপিক ‘ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ দিয়ে প্রতিষ্ঠা পান বলিউডে। এছাড়া অভিনয় করেছেন ‘রাবতা’, ‘কেদারনাথ’, ‘পিকে’, ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’, ‘ছিঁচোড়ে’র মতো সিনেমাতে।
১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ। তার মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে সুশান্তের এক আত্মীয়ের দাবি, তাকে খুন করা হয়েছে।
ওই আত্মীয় ভারতের বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা। সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
শ্রীদেবী: ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়ের এক সাততারা হোটেলের বাথটব থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের অভিযোগসহ আত্মহত্যার গুঞ্জন উঠে।
কিন্তু মেডিকেল পোস্টমর্টেম রিপোর্টে লেখা ছিল, পানিতে ডুবে মৃত্যু। তবে রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়; বাথটবের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা সম্ভব কিনা।
দিব্যা ভারতী: ১৯৯৩ সালের ৭ এপ্রিল নিজের বাড়িতে মাত্র ১৯ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার। বলিউডে কাজ করেন প্রায় বছর খানেকের মত। এই অল্প সময়ে তার এক ডজন ছবির রেকর্ড আজও ভাঙতে পারেনি কেউ।
নিজের বাসায় রাতের পার্টি করার সময় বাড়ির ব্যালকনি থেকে পড়ে মারা যান তিনি। পরিবার থেকে বলা হয়েছিল, টাল সামলাতে না পেরেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তার মৃত্যুকে ঘিরে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ উঠে। যদিও প্রমাণ মেলেনি। এরপর দিব্যার মৃত্যুর তদন্তও পুলিশ বন্ধ করে দেয়।
পারভিন ববি: ১৯৮০ এর দশকে বলিউড কাঁপানো অভিনেত্রী পারভিন ববির শেষ জীবন কেটেছে বড়ই কষ্টে। অজানাভাবে নিজের ফ্ল্যাটেই মারা যান তিনি। খবর পেয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সিল্ক স্মিতা: আইটেম গার্ল থেকে অভিনেত্রী হয়ে উঠতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল এই অভিনেত্রীকে। কিন্তু মুম্বাইয়ের নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি আজও।
গুরু দত্ত: মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান তিনি। গুঞ্জন রয়েছে, মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করার কারণে মৃত্যু হয়েছিল এই অভিনেতা-পরিচালকের। ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, মৃত্যুর আগের দিনও বেশ হাসিখুশি ছিলেন গুরু। কিন্তু এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন হয়নি আজও।
জিয়া খান: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। অভিযোগ উঠেছিল তার সেই সময়ের বয়ফ্রেন্ড সূরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জিয়ার মা দাবি করেছিলেন; পরিস্থিতির চাপে পড়ে জিয়া বাধ্য হয়েছিলেন এমন একটা চরম সিদ্ধান্ত নিতে। জিয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল সুইসাইড নোট।
অর্চনা পাণ্ডে: ২০১৪ সালে মুম্বাইের ভারসোভাতে নিজের ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মডেল অর্চনা পাণ্ডের। তার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়। তাতে বয়ফ্রেন্ড ওমর পাঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন অর্চনা।
নাফিসা জোসেফ: ২০০৪ সালে ‘বিউটি কুইন’ও ভিজে নাফিসার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মুম্বাইয়ে তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে।
কুলজিৎ রণধাওয়া: ২০০৬ সালে বাসা থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। হিপ হিপ হুররে, কোহিনূর-এর মতো জনপ্রিয় শো-এ ছিলেন তিনি। সুইসাইড নোটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে মানসিক চাপের কথা উল্লেখ করেছিলেন কুলজিৎ।
বিবেকা বাবাজি: ভারতের অন্যতম সেরা মডেল বিবেকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর ঘর থেকে পাওয়া একটি ডায়েরিতে লেখা ছিল— আই কিল। সন্দেহ করা হয়, বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে মনোমালিন্যই তার এই পথ বেছে নেওয়ার কারণ।
কুনাল সিংহ: ‘দিল হি দিল ম্যায়’ ছবির অভিনেতা। ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। যদিও অভিনেতার বাবার দাবি, কুনালকে খুন করা হয়েছে।
মনমোহন দেশাই: বাড়ির ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। তার ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, সিনেমার কেরিয়ারে সাফল্য না পাওয়ার কারণে জন্যই আত্মহত্যা করেছেন পরিচালক। সূত্র- আনন্দবাজার