পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের শর্ত শিথিল
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৯, ২০২০ , ৪:২৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থবিলে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে ১০ শতাংশ কর দিয়ে ‘কালো টাকা সাদা’ করার সুযোগ দেওয়া কথা বলেছিলেন। তবে শর্ত ছিল, সেই টাকা ৩ বছরে পুঁজিবাজার থেকে বের করা যাবে না। সংশোধনে তিন বছরের জায়গায় ‘লক ইন’ এর নিয়ম এক বছর করা হয়েছে। যদিও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা লক ইন’ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যকার কর ব্যবধান কমানোসহ আরো বেশকিছু দাবি জানিয়েছিলেন।
সোমবার দুপুরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রী অর্থবিল পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার পাস হবে মূল বাজেট। ১ জুলাই বুধবার থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন।
এর আগে, গত ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটের সঙ্গে অর্থবিল ২০২০ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) শেয়ারবাজারে লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়কর দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছিল।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন এ সংশ্লিষ্ট এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, পুঁজিবাজারের লেনদেন কমে যাওয়ায় একমাত্র কমিশন আয়ের ওপর নির্ভরশীল ব্রোকারেজ হাউজগুলো ক্রমাগত লোকসানের মুখে পড়েছে। ফলে অফিস পরিচালন ব্যয়ভার মেটাতে না পেরে অসংখ্য শাখা অফিস ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে এবং আরও অসংখ্য শাখা অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে ব্রোকারদের বাণিজ্যিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা বিরাজ করছে। কোভিড-১৯ এর ফলে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা ব্রোকারেজ হাউজের এই সংকট আরও চরমে পৌঁছেছে। পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নে ব্রোকারদের বাঁচিয়ে রাখার নিমিত্তে আমরা শেয়ার লেনদেনের ওপর বিদ্যমান অগ্রিম আয়কর দশমিক শূন্য ৫ এর পরিবর্তে দশমিক শূন্য ১৫ করার জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে লিখিত সুপারিশ জানিয়েছি।
এছাড়া, বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ৩ বছরের লক-ইন আমরা প্রত্যাহার চাচ্ছি। একই সঙ্গে এই করহার ১০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করার দাবি করছি। এর ফলে বাজারে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ বাড়বে। তারল্য প্রবাহ বেড়ে বাজার সক্রিয় ও শক্তিশালী হবে। করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা দুই লাখ টাকা করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোম্পানি থেকে দেয়া ডিভিডেন্ড আয়ের করমুক্ত সীমা বিদ্যমান ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির ন্যায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রেও ২ দশমিক ৫ শতাংশ কর কমানোর সুপারিশ করছি। এর ফলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো ব্যবসায়িকভাবে আরও সক্রিয় ও সমৃদ্ধ হবে, যা প্রত্যক্ষভাবে পুঁজিবাজারের জন্য, বিনিয়োগকারীর জন্য তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুফল বয়ে আনবে।
নিয়ম অনুযায়ী, অর্থবিলে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে অর্থমন্ত্রীর সমাপনী বক্তব্য এবং অর্থবিল পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীকে সে বিষয়ে অনুরোধ করেন। এরপর অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ আমলে নিয়ে সেসব বিষয়ে পরিবর্তন এনে অর্থবিল পাসের প্রস্তাব করেন। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী কোনো পরিবর্তন আনতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেননি। ফলে বড় ধরনের কোন পরিবর্তন ছাড়াই পাশ হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরের অর্থবিল।