করোনায় মুদ্রণশিল্পে ৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ১৬, ২০২০ , ৮:৩৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে প্রতিবেদক : করোনা মহামারিকালে দেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডিসিসিআই আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বাংলাদেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পের সংকট ও প্রতিকার নির্ধারণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি এম এ মোমেন।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অর্থপ্রবাহ নিশ্চিত করাই এখন উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, এ মহামারি সংকট শুরু হওয়ার পরপরই সরকার তা মোকাবেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে ঘোষিত এ প্যাকেজ হতে ঋণ সুবিধা পাওয়া উদ্যোক্তাদের সংখ্যা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে তিনি ব্যাংকগুলোকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ঢাক চেম্বারের সভাপতি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই দেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্প বিশেষ করে আমাদের এসএমই খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে এবং এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে তিনি সরকারের নীতি সহায়তা, দক্ষজনবল তৈরিতে প্রশিক্ষণ প্রদান, শুল্ক কাঠামোর সংস্কার, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়ানো এবং আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দেন।
ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি এম এ মোমেন বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যান্য খাতগুলোর মধ্যে এখাতটি খুবই চ্যালেঞ্জিং এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তিনি বলেন, এখাতের উদ্যোক্তারা নিজেদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছেন।
এমএ মোমেন জানান, প্রতিবছর এখাতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার টার্নওভার হয়ে থাকে। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এখাতের উদ্যোক্তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে বর্তমানে উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচলনাই অনেকটা হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও এ শিল্পের স্থানীয় উদ্যোক্তা ও উৎপাদনকারীদের বাঁচিয়ে রাখতে তাদের আর্থিক এবং নীতি সহায়তার আহ্বান জানান।
অনলাইন ভিত্তিক বইয়ের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়লেও মুদ্রিত বইয়ের চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা সহসাই কমবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বর্তমান অবস্থা মোকবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনার প্যাকেজ হতে উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হলে ব্যাংকগুলোর মানসিকতা পরিবর্তন একান্ত আবশ্যক বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি আরোও বলেন, এটি একটি শ্রমঘন শিল্প হওয়ার, এর মাধ্যমে অনেক বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব, তাই এখাতের প্রয়োজনীয় পরিচর্যার কোনো বিকল্প নেই।
ডিসিসিআইর সভাপতি শামস মাহমুদের সঞ্চালনায় পরিচালিত এ ওয়েবিনারে নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত, বাংলাদেশ পেপার ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ভরসা, হাসেম পেপার মিলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমল হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সসোরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারর্স এন্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আব্দুল কাদের খান, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল, বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফেকচার্স অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি বাশার পাটোয়ারী এবং চট্রগ্রাম কাগজ ও সেলোফোন অ্যাসোসিয়েশনে সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ বেলাল প্রমুখ যুক্ত হন।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ প্রকাশনা ও মুদ্রণ খাতে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে গবেষণা পরিচালনা করা এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতি সহায়তা প্রদানের ওপর জোরারোপ করেন।