আজকের দিন তারিখ ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// রিফাত হত্যা মামলা : যে সব অপরাধে অভিযুক্ত ১০ আসামি

রিফাত হত্যা মামলা : যে সব অপরাধে অভিযুক্ত ১০ আসামি


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০ , ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক  :   বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় আজ বুধবার। পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ১০ আসামির বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে তার সার সংক্ষেপ তুলে ধরা হলো:

রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী

আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন

রাব্বি আকন কিশোর গ্যাং বন্ড গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। আসামি নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সে। বন্ধুত্বের কারণেই সে মিন্নিকে আগে থেকেই চিনতো। মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের বিষয়েও সে জানতো। হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে সে আগে থেকেই রিফাত ফরাজীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনে জানতে পারে। হত্যার দিন কলেজের মধ্যে সায়েন্স বিল্ডিং এর সামনে আসামি রিফাত হাওলাদার, রিফাত ফরাজী, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও রাব্বি আকন জড়ো হয়ে পুনরায় হত্যার পরিকল্পনা করে। রাব্বি আকন বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া গ্রামের কালাম আকনের ছেলে।

মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত

মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত কিশোর গ্যাং বন্ড গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। রিফাত শরীফ হত্যার দিন কলেজের মধ্যে হত্যা পরিকল্পনার সময় সে উপস্থিত ছিল। পরিকল্পনার অংশ অনুযায়ী রিফাত শরীফকে কলেজ গেট থেকে কলার ধরে ক্যালিক্স অ্যাকাডেমির দিকে নিয়ে যায় সে। এরপর সেখানে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী তাকে এলোপাতাড়ি কোপানো ও মারধর শুরু করলে সিফাতসহ অন্য আসামিরা তাদের চারদিক দিয়ে ঘিরে রাখে। যাতে কেউ রিফাত শরীফকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে না পারে। সিফাত বরগুনা পৌর শহরের কলেজিয়েট স্কুল রোডের মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

মো. রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়

টিকটক হৃদয় বন্ড ০০৭ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এছাড়াও বন্ড বাহিনীর প্রধান নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল টিকটক হৃদয়। বরগুনা সরকারি কলেজে পরিকল্পনার সময় সে সেখানে উপস্থিত ছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, হত্যার দিন সকালে সে কলেজ গেটে অবস্থান নেয়। আসামিরা যখন রিফাত শরীফকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন সে সামনে থেকে সাধারণ মানুষজন সরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে। যখন আসামিরা অস্ত্র আনতে দৌঁড়ে যায় তখন সে লাঠি নিয়ে আসে। মো. রেজোয়ান আলী খান হৃদয় বরগুনা পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকার রফিক আলী খানের ছেলে।

মো. হাসান

মো. হাসান রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে। রিফাত ফরাজী তাকে হত্যার পরিকল্পনা বুঝিয়ে দেওয়ার পর হত্যার দিন সকালেই সে বরগুনা সরকারি কলেজের গেটে অবস্থান নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রিফাত শরীফ যাতে পালাতে না পারে সে বিষয়ে সে নজর রাখছিল। হাসান বরগুনা পৌর শহরের উপকন্ঠে লাকুরতলা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে।

মো. মুসা ওরফে মুসা বন্ড

মুসা বন্ড ০০৭ বন্ড গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের অন্যতম প্রধান সহচর। মুসা এলাকায় মাদক বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এই মুসা। নয়ন বন্ড এর কাছ থেকে মুসা রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাত শরীফ যাতে পূর্ব দিকে পালাতে না পারে, এ জন্য সে অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মুসার নামে বরগুনা সদর থানায় একটি মাদক ও একটি অস্ত্র আইনের মামলা রয়েছে। সে বরগুনা পৌর শহরের ধানসিঁড়ি রোড এলাকার মো. কালাম খানের ছেলে। প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের মধ্যে একমাত্র মুসাই এখনও পলাতক রয়েছে।

আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি

পুলিশের দায়ের করা চার্জশিট অনুযায়ী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হত্যার পরিকল্পনাকারী। প্রথমে এই মামলায় তাকে সাক্ষী রাখা হলেও পরে তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। মিন্নির পরিকল্পনায় আসামি নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী রিফাত শরীফকে হত্যা করে। রিফাত শরীফ ও নয়ন বন্ডের  সঙ্গে দ্বৈত প্রেমের সম্পর্কের কারণে মনোমালিন্য হওয়ায় এই হত্যার পরিকল্পনা করে মিন্নি এমনটাই উল্লেখ করা হয়। ঘটনার সময় হত্যার অভিযোগ থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য মিন্নি বাঁচানোর নাটক করে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। মিন্নি নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী।

 রাফিউল ইসলাম রাব্বি

রাফিউল ইসলাম রাব্বি রিফাত হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেওয়া নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ না নিলেও বিষয়টি জেনেও আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাতকে আশ্রয় ও পালাতে সহযোগিতা করে রাব্বি। রাফিউল ইসলাম রাব্বি বরগুনা সদর উপজেলার ৯ নম্বর ইউনিয়নের উরবুনিয়া গ্রামের মো. আ. রহমানের ছেলে।

মো. সাগর

মো. সাগর আসামি রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এছাড়া বন্ড ০০৭ মেসেঞ্জার গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। পুলিশ চার্জশিটে তাকে হত্যায় প্ররোরচনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। কারণ হত্যার দিন সবাইকে কলেজে দেখতে চাই রিফাত ফরাজীর এমন পোস্টের পর সাগর বিজয়সূচক চিহ্ন দিয়েছিল। এছাড়াও হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে সে ওয়াকিবহাল ছিল। সাগর বরগুনা সদর উপজেলার ৯ নম্বর ইউনিয়নের নলী মাইঠা গ্রামের মো. আবদুল লতিফ খানের ছেলে। সাগরের নামে বরগুনা ও বরিশালে দুটি মামলা রয়েছে।

কামরুল ইসলাম সায়মুন

কামরুল ইসলাম সায়মুন আসামি নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রাব্বি আকনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যা করার বিষয়টি জেনেও তার নিজের ব্যবহৃত এফজেড মটোরসাইকেল দিয়ে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। সায়মুন বরগুনা পৌর শহরের ডিশ ব্যবসায়ী কাওসার আহমেদ লিটনের ছেলে।