সীমান্ত বন্ধ ইস্যু করে যেন দ্রব্যমূল্যের দাম না বাড়ে
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৭, ২০২১ , ১২:২৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়ায় দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর শুরু হয়েছে। এই সময় স্থলপথে পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের লোক চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে সীমান্ত বন্ধের অজুহাত দেখিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও দাম বাড়িয়ে দিতে পারে অসাধু ব্যবসায়ীরা। রোজা চলাকালে দাম বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নেমে আসবে। সংশ্লিষ্টদের উচিত এখন থেকে বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। যেন অসাধুরা কোনোভাবে সুযোগ না নিতে পারে। ভারতে তিন দিনেই প্রায় ১০ লাখ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে করোনা ভাইরাসের একটি নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়ন করে একদল বিশ্লেষক বলেছেন, করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে। এমন পরিস্থিতি সীমান্ত বন্ধ রাখা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য আমদানি হয়। দেশটি থেকে যেসব খাদ্যপণ্য আমদানি হয় দেশে তার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেলসহ ভোজ্যতেল, চিনি, মধু, কোমল পানীয়, চিপস, বিস্কুট, চকোলেট ও ক্যান্ডি জাতীয় খাবার। বাংলাদেশে বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদার ৪০ শতাংশ আমদানি করতে হয়, যার ৯৫ শতাংশ আসে ভারত থেকে। পেঁয়াজের বাজার এখন স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যাপ্ত পেঁয়াজও মজুত রয়েছে। বিশেষ করে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মানতেই হবে যে, অতীতের তুলনায় গত কয়েক বছরে রোজার সময় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার মোটামুটি সফলতার পরিচয় দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবার সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার আগের তুলনায় বেশি সতর্ক রয়েছে। কাজেই সীমান্ত বন্ধ ইস্যু করে করে যেন রোজায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এখন থেকেই। রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ভারত থেকে পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। এর বাইরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রাখতে হবে।