পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মতি
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৫, ২০২১ , ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে প্রতিবেদক : নতুন ২০২১-২২ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রাখছে সরকার। তবে সেক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ করসহ প্রদেয় করের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানা প্রদান করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। ফ্ল্যাট বাড়ির মতো অপ্রদর্শিত সম্পদ বৈধ করার সুযোগও দেবে সরকার। সেক্ষেত্রে জরিমানার পাশাপাশি ফ্ল্যাটের আকার এবং অবস্থান অনুযায়ী প্রতি বর্গমিটারের জন্য ২০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া, অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা ব্যাংক আমানত এবং সঞ্চয়পত্র বৈধকরণের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও অন্যান্য অংশীদারদের দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত মঙ্গলবার এই প্রস্তাবনা পাঠায়। এছাড়া, এনবিআর অর্থবিল সংশোধনীতে কালো টাকার উৎস সংক্রান্ত প্রশ্ন তোলা থেকে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে বিরত রাখতে একটি আইনি দায়মুক্তি বা ইনডেমনিটি বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এনবিআর-এর প্রস্তাব অনুসারে, অপ্রদর্শিত অর্থের ওপর প্রযোজ্য করহার হবে ২৫ শতাংশ। যা ব্যক্তিশ্রেণির আয়করের সর্বোচ্চ করহার। এছাড়া, নিয়মিত করদাতাদের প্রতি ন্যায় নিশ্চিত করতে করের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের এক বছরের মধ্যে কেউ অর্থ উত্তোলন করলে তাকে অতিরিক্ত আরও ১০ শতাংশ জরিমানা প্রদান করতে হবে বলেও জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অর্থনীতির মূলধারায় অপ্রদর্শিত অর্থের ব্যবহার এবং বিদেশে অর্থ পাচার ঠেকানোর লক্ষ্যেই সরকার অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ রাখছে বলেও মন্তব্য করেন তারা। প্রস্তাবিত বিধান অনুসারে পুঁজিবাজার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের মতো সিকিউরিটিতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ৩০ দিনের মধ্যে মোট ২৭.৫ শতাংশ কর (২৫ শতাংশ নিয়মিত কর এবং করের পরিমাণের ওপর ১০ শতাংশ জরিমানা) প্রদান করতে হবে। বিদায়ী অর্থবছরে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার বিধান রাখা হয়েছিল।
তবে, আসন্ন বাজেটে নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ অনুসারে সিকিউরিটি বিনিয়োগ এবং অপ্রদর্শিত সম্পদ ও নগদ অর্থের জন্য বিশেষ কর ব্যবস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার বর্তমান বিধানগুলো বাদ পড়তে চলেছে। এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বিদ্যমান সুযোগের আওতায় ১০ হাজার ৩৪ জন ব্যক্তি ১৪২.৯৫ বিলিয়ন টাকা সমমূল্যের নগদ অর্থ ও সম্পদ বৈধ করেন। এর বিপরীতে রাজস্ব বোর্ড এক হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা কর পায়। এদের মধ্যে, মোট ৯ হাজার ৬৯৩ জন ব্যক্তি নগদ, ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট, সঞ্চয়পত্র সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য সম্পদ মিলিয়ে ১৩৮.৬০ বিলিয়ন টাকা সাদা করেন। বিপরীতে ১৩.৯০ বিলিয়ন টাকা কর প্রদান করেন।
অন্যদিকে, ৩৪১ জন ব্যক্তি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে ৪.৩৫ বিলিয়ন টাকা বৈধ করেন এবং কর হিসেবে ৪৯০ মিলিয়ন টাকা প্রদান করেন