অর্থহীন লকডাউন যেন না হয়
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৭, ২০২১ , ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতে আগামীকাল থেকে সারাদেশে কঠোরভাবে লকডাউনের ঘোষণা করেছে সরকার। এর আগে সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকার চারপাশের জেলাগুলোতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। কিন্তু দেশের কোথাও কোনোভাবেই বিধিনিষেধ বা ‘লকডাউন’ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। জেলায় জেলায় চলমান লকডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই সাধারণ মানুষের মাঝে। লকডাউনের বিধিনিষেধের মধ্যে শহর ও গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে মানুষ ভিড় করছে। সরকারের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঢাকায় ঢুকছে মানুষ। নিজে সুস্থ থাকতে হলে, পরিবারকে সুস্থ রাখতে হলে সরকারের ঘোষিত এ সময়ে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। সচেতন হতে হবে। এর বিকল্প আর কিছু নেই। দেখা যাচ্ছে, লকডাউন ঘোষণার পর গতকাল থেকে মানুষের গ্রামে যাওয়ার হিড়িক পড়ে গেছে। এমন ঘটনা দুঃখজনক। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ যদি প্রতিরোধ না করা যায় তাহলে করোনার পরিস্থিতি আগের চেয়েও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে। আর এ বিপর্যয় ঠেকাতে গেম চ্যাঞ্জার হিসেবে তিন পদ্ধতির কথা বলছেন তারা। ভ্যাকসিন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং রোগী বা সম্ভাব্য রোগীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা। শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণ অনেকটা কমে আসবে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে করোনার অবস্থা শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে বø্যাক ফাঙ্গাসও দেশে সংক্রমিত হতে পারে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এ অবস্থা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আগে ভারতীয় করোনা ভ্যারিয়েন্ট এবং বø্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাসে মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। এই মহামারি মোকাবিলায় সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ৪০টি জেলা। এসব জেলা ও এর আওতাধীন উপজেলা হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন ও বেডের সংকট প্রকট রয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সীমান্তবর্তী জেলা-উপজেলাসহ উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দেশের অর্থনীতির চেয়ে কোটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের শ্রমজীবী মানুষ সামাজিক দূরত্ব মানছে না বা না মানতে বাধ্য হচ্ছে, মোটা দাগে পেটের দায়ে, জীবিকার চরিত্রগত কারণে সেটাও বিবেচনায় নেয়া জরুরি। আবার নিম্নবিত্ত-উচ্চবিত্ত অনেকেই অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হয়ে থাকে। এরা নিজেরা যেমন সচেতন না তেমনিভাবে আরেকজনকে বিপদে ফেলছে। বারবার সরকার বলছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। অপ্রয়োজনে বাইরে না যাওয়া, যতটা সম্ভব ঘরে থাকুন, নিজে সুস্থ থাকুন এবং দেশের মানুষকে সুস্থ রাখুনÑ করোনা প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর এটাই হলো মূলমন্ত্র। এক কথায়, করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বাধ্য করতে হবে। সবার মাস্ক পরতে হবে। জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে না পারলে সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখতে হবে।