পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় গেজেট প্রকাশ
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৩, ২০২১ , ১২:৫৫ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে প্রতিবেদক : তালিকাভুক্ত কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশকে একটি স্বতন্ত্র তহবিলের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় কাজে লাগাতে একটি বিধিমালা তৈরি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অবণ্টিত থাকা ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি নগদ ও স্টক লভ্যাংশ এ তহবিলের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
সম্প্রতি পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল বিধিমালা বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিধিমালাটি বর্তমানে চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। বিধিমালা অনুসারে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অবণ্টিত নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ, অবণ্টিত রাইট শেয়ার, আইপিও সাবস্ক্রিপশনের অফেরত অর্থের সমন্বয়ে এ তহবিল গঠিত হবে। তবে এক্ষেত্রে শুধু তিন বছরের বেশি সময় ধরে অবণ্টিত অবস্থায় থাকা অর্থ এ তহবিলে স্থানান্তর করা হবে। তহবিলে শেয়ার বা অর্থ হস্তান্তরের পরও তা দাবি করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী। দাবির স্বপক্ষে প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি কিংবা ব্রোকারেজ হাউজ অথবা মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনের এক মাসের মধ্যে ওই বিনিয়োগকারীর শেয়ার বা টাকা ফেরত দেয়া হবে।
পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার কেনাবেচা বা বিনিয়োগের জন্য স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেয়া হবে। শেয়ার কেনাবেচা করতে গিয়ে যাতে তহবিলের কোনো লোকসান না হয়, সেজন্য সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন করা হবে। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অডিট কমিটিও গঠন করা হবে। তহবিল পরিচালনায় ১১ সদস্যের গভর্নিং বডি থাকবে, যার মধ্যে একজন চেয়ারম্যান ও তিনজন সদস্যকে মনোনীত করবে বিএসইসি।
এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) থেকে একজন করে মনোনীত সদস্য গভর্নিং বডিতে থাকবেন। তহবিল পরিচালনার ক্ষেত্রে একজন পেশাদার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট কিংবা চার্টার্ড সেক্রেটারি অথবা চার্টার্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট এবং একজন চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) থাকবেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বিএসইসি এ ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৩ মে অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৭৭২তম নিয়মিত কমিশন সভায় ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড নামে ওই ফান্ড গঠন ও পরিচালন-সংক্রান্ত বিধিমালা অনুমোদন করে। এর আগে গত বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছে কী পরিমাণ অবণ্টিত লভ্যাংশ রয়েছে সে তথ্য সংগ্রহ করে কমিশন। গত বছরের হিসাব অনুসারে দেখা যায়, ডিএসই ও সিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট অপরিশোধিত স্টক লভ্যাংশের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৪৬ টাকা। অন্যদিকে ডিএসইকে দেয়া তথ্যানুসারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অপরিশোধিত নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৬৩৪ কোটি ৬৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৫৮ টাকা। সিএসইকে দেয়া হিসাব অনুযায়ী কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর ৩২১ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার নগদ লভ্যাংশ অপরিশোধিত রয়েছে। আর মোট অপরিশোধিত নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৯৫৬ কোটি ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৫৭ টাকা।